হাইল হাওর
বাংলাদেশ নদীমাতৃক দেশ। এদেশে বিভিন্ন প্রকার জলধারা ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে, যার মাঝে একটি হাইল হাওর। বাংলাদেশের সৌন্দর্যের এক অন্যতম লীলাভূমি সিলেট বিভাগের মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল। পাহাড়, টিলা, চা বাগান ও ঝর্ণা বেষ্টিত চির সবুজ এ উপজেলা। তার মাঝে হাইল হাওরাঞ্চলের বিস্তীর্ণ জলরাশি এক অপরুপ মহিমায় পর্যটকদের আকৃষ্ট করে। সিলেটের মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল এবং হবিগঞ্জ জেলার বাহুবল উপজেলা জুড়ে বিস্তৃত এ হাওরটির মোট আয়তন ১০ হাজার হেক্টর। যার ৪ হাজার হেক্টর প্লাবন ভূমি, ৪ হাজার ৫১৭ হেক্টর হাওর, ১ হাজার ৪০০ হেক্টর বিল, ৪০ হেক্টর খাল এবং ৫০ হেক্টর নদী। এতে রয়েছে ১৪ টি বিল এবং পানি নিষ্কাশনের জন্য ১৩ টি নালা। প্রচুর লতাপাতা ও গুল্ম জাতীয় উদ্ভিদ থাকায় স্থানীয়দের কাছে এটি লতাপাতার হাওর নামেও পরিচিত। এ হাওরে প্রায় ৯৮ প্রজাতির মাছ ও প্রায় ১৬০ প্রজাতির পাখির বিচরণ লক্ষ করা যায়।
মনু ও কুশিয়ারা নদী বিধৌত অববাহিকা এলাকায় মৌলভীবাজারের দক্ষিণ-পশ্চিম অংশে হাইল হাওরের অবস্থান। কয়েক দশক আগে এই হাওরের আয়তন প্রায় ১০০ বর্গ কি.মি থাকলেও বর্তমানে এটি সংকুচিত হয়ে ২০ বর্গ কি.মি তে নেমে এসেছে। হাওরের মধ্যে দিয়ে গোপলা নদী যা মেঘনা নদীর উজানে মিলিত হয়েছে। ১৯৮০ সালের পর থেকে বাণিজ্যিক মাছের খামার গড়ে উঠতে থাকে হাইল হাওর। ২০০০ সালের পর থেকে এর ব্যাপকতা বাড়লে মৎস্য খামারিরা গড়ে তোলেন বিশাল বিশাল পুকুর।
কখন যাবেন |
---|
হাইল হাওরে ভ্রমণের উপযুক্ত সময় বর্ষাকাল হতে শীতকাল। কেননা বর্ষাকালে হাওরে সব ধরণের প্রাকৃতিক উদ্ভিদ ও জীববৈচিত্র দেখা যায়। সেই সাথে শীতকালে শ্যাতশ্যাতে পরিবেশ থাকেনা বলে প্রাকৃতিক পরিবেশ ও সৌন্দর্য আরো চমকপ্রদ লাগে। এ সময় প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের আমিষ উপভোগের পাশাপাশি স্থানীয় সংস্কৃতির সাথে প্রচলিত সংস্কৃতির এক অপরুপ মিশ্রন উপভোগ করা যায়। এছাড়া শীতকালে এখানকার খেজুর গাছীরা সাড়িসাড়ি ৩ শতাধিক খেজুর গাছ থেকে খেজুরের রস সংগ্রহ ও বিক্রি করে। টাটকা খেজুর রস খেতে ভোর প্রথম প্রহর থেকেই ভীর জমান হাজারো পর্যটক। |
বিশেষ পরামর্শ |
|
দেশের বিভিন্ন বিভাগীয় শহর দূরত্ব
|
|
ঢাকা
|
১৭৯ কি.মি. (ঢাকা – সিলেট হাইওয়ে হয়ে গেলে)
|
রাজশাহী
|
৩৯৪ কি.মি. (ঢাকা – সিলেট হাইওয়ে হয়ে গেলে)
|
রংপুর
|
৪৪৪ কি.মি. (ঢাকা – সিলেট হাইওয়ে হয়ে গেলে)
|
সিলেট
|
১০১ কি.মি. (মৌলভীবাজার হয়ে গেলে)
৭৮ কি.মি. (ঢাকা – সিলেট হাইওয়ে হয়ে গেলে)
|
ময়মনসিংহ
|
২২৮ কি.মি. (ঢাকা – সিলেট হাইওয়ে হয়ে গেলে)
|
খুলনা
|
৩৮২ কি.মি. (ঢাকা – সিলেট হাইওয়ে হয়ে গেলে)
|
বরিশাল
|
৩৪৪ কি.মি. (ঢাকা – সিলেট হাইওয়ে হয়ে গেলে)
|
চট্টগ্রাম
|
৩১২ কি.মি. (ঢাকা – চট্টগ্রাম হাইওয়ে হয়ে গেলে)
|
হাইল হাওর যেতে আপনাকে আগে শ্রীমঙ্গল অথবা সিলেট হয়ে শ্রীমঙ্গল অথবা মৌলভীবাজার হয়ে শ্রীমঙ্গল যেতে হবে। | |
ঢাকা থেকে যাওয়ার উপায় |
|
বাস |
ঢাকার বাসস্টান্ড সমূহ:-
|
বাস সমূহ:-
(যাত্রা পূর্বে অবশ্যই কোথায় যাচ্ছেন, পরিবহনগুলো আপনার গন্তব্য অবধি যাবে কিনা তা ভালোভাবে যাচাই করে নিবেন। কেননা সময় পরিবর্তনের সাথে তথ্যগুলোও পরিবর্তনশীল) |
|
ট্রেন |
ঢাকা থেকে যাওয়ার ট্রেনসমূহ- ঢাকা কমলাপুর কিংবা বিমান বন্দর রেলস্টেশন থেকে শ্রীমঙ্গল স্টেশন পর্যন্ত ট্রেনসমূহ-
(ট্রেনের সময় এবং চলাচলের দিন পরিবর্তন হতে থাকে। তাই যাত্রাপূর্বে খোঁজ নিয়ে যাওয়া ভালো।) |
বিমান |
বিমানসমূহ:- হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে সিলেট বিমানবন্দর যাওয়ার বিমানসমূহ-
|
রাজশাহী থেকে যাওয়ার উপায় |
|
বাস |
বাস স্টান্ডসমূহ:-
বাস সমূহ:-
(যাত্রা পূর্বে অবশ্যই কোথায় যাচ্ছেন, পরিবহনগুলো আপনার গন্তব্য অবধি যাবে কিনা তা ভালোভাবে যাচাই করে নিবেন। কেননা সময় পরিবর্তনের সাথে তথ্যগুলোও পরিবর্তনশীল) |
ট্রেন |
[রাজশাহী থেকে সিলেট সরাসরি কোনো ট্রেন নেই। আপনাকে আগে ঢাকা গিয়ে তারপর ট্রেনে যেতে হবে।] ঢাকা যাওয়ার জন্য জনপ্রিয় ট্রেনগুলির মধ্যে রয়েছে:
[যেহেতু ঢাকা মেইল ট্রেন ধরতে হবে। তাই প্রথমে নাটোর থেকে দ্রুতযান এক্সপ্রেস দিয়ে ঢাকা যাওয়া ভালো] |
বিমান |
বিমানসমূহ:
|
রংপুর থেকে যাওয়ার উপায় |
|
বাস |
বাস স্টান্ডসমূহ:-
বাস সমূহ:-
(যাত্রা পূর্বে অবশ্যই কোথায় যাচ্ছেন, পরিবহনগুলো আপনার গন্তব্য অবধি যাবে কিনা তা ভালোভাবে যাচাই করে নিবেন। কেননা সময় পরিবর্তনের সাথে তথ্যগুলোও পরিবর্তনশীল) |
ট্রেন |
[রংপুর থেকে সিলেট সরাসরি কোনো ট্রেন নেই। আপনাকে আগে ঢাকা গিয়ে তারপর ট্রেনে যেতে হবে।] ঢাকা যাওয়ার জন্য জনপ্রিয় ট্রেনগুলির মধ্যে রয়েছে:
|
বিমান |
[রংপুরে কোনো বিমানবন্দর না থাকায় সৈয়দপুর থেকে আপনাকে সিলেট যেতে হবে।] বিমানসমূহ:
|
সিলেট থেকে যাওয়ার উপায় |
|
বাস |
(হাইল হাওর সিলেট বিভাগে হওয়ায় শ্রীমঙ্গল যেতে মৌলভীবাজারগামী অথবা শ্রীমঙ্গলগামী সরাসরি লোকাল ও মেইল বাস পেয়ে যাবে। তবে যাত্রা পূর্বে অবশ্যই কোথায় যাচ্ছেন, পরিবহনগুলো আপনার গন্তব্য অবধি যাবে কিনা তা ভালোভাবে যাচাই করে নিবেন। কেননা সময় পরিবর্তনের সাথে তথ্যগুলোও পরিবর্তনশীল) |
ট্রেন |
(সিলেট থেকে সরাসরি কক্সবাজার যাওয়ার কোনো ট্রেন সার্ভিস না থাকায় আপনাকে আগে ঢাকা অথবা চট্টগ্রাম যেতে হবে।) সিলেট থেকে শ্রীমঙ্গল যাওয়ার ট্রেনসমূহ:-
(ট্রেনের সময় এবং চলাচলের দিন পরিবর্তন হতে থাকে। তাই যাত্রাপূর্বে খোঁজ নিয়ে যাওয়া ভালো।) |
ময়মনসিংহ থেকে যাওয়ার উপায় |
|
বাস |
বাস স্টান্ডসমূহ:-
বাস সমূহ:-
(যাত্রা পূর্বে অবশ্যই কোথায় যাচ্ছেন, পরিবহনগুলো আপনার গন্তব্য অবধি যাবে কিনা তা ভালোভাবে যাচাই করে নিবেন। কেননা সময় পরিবর্তনের সাথে তথ্যগুলোও পরিবর্তনশীল) |
ট্রেন |
[ময়মনসিংহ থেকে সিলেটে সরাসরি কোনো ট্রেন নেই।] |
খুলনা থেকে যাওয়ার উপায় |
|
বাস |
[খুলনা থেকে সিলেটে সরাসরি কোনো বাস নেই। আপনাকে আগে ঢাকা গিয়ে তারপর বাসে অথবা ট্রেনে অথবা বিমানে যেতে হবে।] বাস স্টান্ডসমূহ:-
ঢাকা যাওয়ার বাস সমূহ:-
(যাত্রা পূর্বে অবশ্যই কোথায় যাচ্ছেন, পরিবহনগুলো আপনার গন্তব্য অবধি যাবে কিনা তা ভালোভাবে যাচাই করে নিবেন। কেননা সময় পরিবর্তনের সাথে তথ্যগুলোও পরিবর্তনশীল) |
ট্রেন |
[খুলনা থেকে সিলেটে সরাসরি কোনো ট্রেন নেই। আপনাকে আগে ঢাকা গিয়ে তারপর ট্রেনে যেতে হবে।] ঢাকা যাওয়ার জন্য জনপ্রিয় ট্রেনগুলির মধ্যে রয়েছে:
|
বিমান |
[খুলনা থেকে সিলেটে সরাসরি কোনো ফ্লাইট নেই। আপনাকে আগে ঢাকা গিয়ে তারপর বাসে অথবা ট্রেনে অথবা বিমানে যেতে হবে।] ঢাকা যাওয়ার বিমানসমূহ:
|
বরিশাল থেকে যাওয়ার উপায় |
|
বাস |
বাস স্টান্ডসমূহ:-
বাসসমূহ:-
|
বিমান |
বিমানসমূহ:-
|
চট্টগ্রাম থেকে যাওয়ার উপায় |
|
বাস |
বাস স্টান্ডসমূহ:-
বাস সমূহ:-
(যাত্রা পূর্বে অবশ্যই কোথায় যাচ্ছেন, পরিবহনগুলো আপনার গন্তব্য অবধি যাবে কিনা তা ভালোভাবে যাচাই করে নিবেন। কেননা সময় পরিবর্তনের সাথে তথ্যগুলোও পরিবর্তনশীল) |
ট্রেন |
জনপ্রিয় ট্রেনগুলির মধ্যে রয়েছে:
|
বিমান |
বিমানসমূহ:
|
শ্রীমঙ্গল-মৌলভীবাজার সড়কে অবস্থিত কালাপুর বাজার হয়ে বরুনা-হাজীপুর পাকা রাস্তা ধরে হাজীপুর বাজার (স্থানীয়দের কাছে ঘাটের বাজার নামে পরিচিত) এলে পায়ে হেটে অথবা যানবাহনে চড়ে হাইল হাওর যাওয়া যায়। এ বাজার থেকে মাত্র ৪ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত হাইল হাওর। |
থাকা ও খাওয়ার ব্যবস্থা |
|
(হাওর এলাকায় অবস্থিত বিল ইজারাদারদের দোচালা কুটির গুলোয় অনায়াসেই ৪/৫ জন থাকা যায়। তবে এর জন্য অবশ্যই বিল মালিকদের অনুমতি নিতে হবে। হাওরের রাতের সৌন্দর্য উপভোগের জন্য বিল এলাকায় তাঁবুতে রাত্রিযাপন করতে পারেন। হাইল হাওরের কাছেই শ্রীমঙ্গলের অবস্থান হওয়ায় শ্রীমঙ্গলেই রাত্রিযাপন করার জন্য বিভিন্ন মানের আবাসিক হোটেল ও রিসোর্ট রয়েছে।) |
|
আবাসিক হোটেলসমূহ |
শ্রীমঙ্গলের কিছু পাঁচ তারকা মানের হোটেলসমুহ:-
সিলেটের হোটেলসমুহ:-
(উক্ত আবাসিক হোটেলসমূহের নাম দিয়ে ইন্টারনেটে সার্চ দিলে বুকিং সম্পর্কিত সকল তথ্য পেয়ে যাবেন।) মৌলভীবাজারে হোটেলসমুহ:-
(উক্ত আবাসিক হোটেলসমূহের নাম দিয়ে ইন্টারনেটে সার্চ দিলে বুকিং সম্পর্কিত সকল তথ্য পেয়ে যাবেন। এছাড়াও আরো অনেক আবাসিক হোটেল মৌলভীবাজার এর সরকারি ওয়েবসাইটে পাওয়া যায়।) |
রেস্টুরেন্টসমূহ |
শ্রীমঙ্গলের জনপ্রিয় খাবার হোটেল:
সিলেট শহরের জিন্দা বাজারের জনপ্রিয় খাবার হোটেল:
(শ্রীমঙ্গল সহ মৌলভীবাজার ও সিলেট শহরের যেকোনো জায়গায় কিংবা আবাসিক হোটেলের আশেপাশে অনেক রেস্টুরেন্ট পাবেন।) |
বি.দ্রঃ সময়ের পরিবর্তনের সাথে সাথে অনেক নতুন নতুন থাকার এবং খাওয়ার হোটেল/রেস্টুরেন্ট তৈরি হয়। |
ভ্রমণের সুবিধা হল–
- উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা।
- পরিবার/দম্পতি বা বন্ধুদের সাথে উপযুক্ত সময় কাটানোর সুবিধা।
- সুন্দর এবং মনোরম পরিবেশ।
পরামর্শ: প্রথমত, গাড়ি বা নৌকা ভ্রমণ, হোটেল বুকিং, খাবার কিংবা কোন কিছু কেনার পূর্বে দর কষাকষিতে সর্বদা সতর্ক থাকবেন। এছাড়াও-
- প্রয়োজনে ছাতা বা রেইনকোট নিবেন।
- স্থানীয় গাইডের সাহায্যে পুরো অঞ্চল সুন্দরভাবে ঘুরতে পারবেন।
- পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর কিছু এড়িয়ে চলবেন।
দৃষ্টি আকর্ষণ: যে কোন পর্যটন স্থান আমাদের দেশের সম্পদ। এইসব স্থানের প্রাকৃতিক কিংবা সৌন্দর্য্যের জন্যে ক্ষতিকর এমন কিছু করা থেকে বিরত থাকবেন, অন্যদেরকেও উৎসাহিত করবেন। দেশ আমাদের, দেশের সকল কিছুর প্রতি যত্নবান হবার দায়িত্বও আমাদের।
সতর্কতা: হোটেল, রিসোর্ট, যানবাহন ভাড়া ও অন্যান্য খরচ সময়ের সাথে পরিবর্তন হয় তাই উল্লিখিত তথ্য বর্তমানের সাথে মিল নাও থাকতে পারে। তাই অনুগ্রহ করে আপনি কোথাও ভ্রমণে যাওয়ার আগে বর্তমান ভাড়া ও খরচের তথ্য জেনে পরিকল্পনা করবেন।
বি.দ্রঃ সকল প্রকার দালাল/প্রতারক থেকে সাবধান। পথে অনেক সাবধানে চলবেন যেন কোনো প্রকার বিপদে না পরেন। যেকোনো সমস্যায় স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগীতা নিবেন অথবা বাংলাদেশের জাতীয় জরুরী সেবা – ৯৯৯ এ কল করবেন।
যেকোন তথ্য অথবা ভ্রমণ সহায়তার জন্য যোগাযোগ করুন অথবা কমেন্ট করুন-
→ ইমেইল – [email protected]