তোহাখানা, যা চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার শাহাবাজপুর ইউনিয়নে অবস্থিত। এটি মুঘল আমলের ঐতিহ্যবাহী একটি স্থাপনা।
জানা যায়, ১৬৩৯-১৬৫৮ খ্রিষ্টাব্দে এটি নির্মিত হয়। মুঘল সম্রাট শাহজাহানের পু্ত্র সুলতান শাহ সুজা তাঁর মুর্শিদ সৈয়দ নেয়ামতউল্লাহ (রহ.)- র বসবাসের জন্য ফিরোজপুরে এই প্রাসাদটি নির্মাণ করেন। যা শীতকালীন সুবিধার্থে তাপনিয়ন্ত্রিত ৩ তলা বিশিষ্ট একটি প্রাসাদ তাই এটিকে ঠান্ডা ভবন বা প্রাসাদ ও বলা হয়।
এখানে রয়েছে-
- হযরত শাহ সৈয়দ নেয়ামতউল্লাহ (রহ.)- র মাজার
- বৃক্ষ ও ইটের প্রাচীরে ঘেরা বর্গাকার নকশাকৃত সমাধি
- তিন গম্বুজবিশিষ্ট মসজিদ
- কুপ
- এক গম্বুজ বিশিষ্ট সমাধি
উল্যেখ্য, শাহ্ নেয়ামত উল্লাহ (রহঃ)-র জন্ম ও মৃত্যুর দিন হিসেবে প্রতি বছরের পহেলা মহরম মাজারে “ওরশ শরীফ” আয়োজন করা হয়। তিনি ইসলাম প্রচারের জন্য সর্বপ্রথম ভাদ্র মাসের শেষ শুক্রবার গৌড় নগরীতে পদার্পণ করায় প্রত্যেক ভাদ্র মাসের শেষ শুক্রবার ফজিলতময় দিন হিসেবে ভিন্ন ধর্মী ওরস শরীফের আয়োজন হয়ে থাকে। এছাড়াও- বৃহস্পতিবার আছরের পর সারারাত ব্যাপী যিকির,শুক্রবার বাদ জুম্মা গিলাফ পরানো এবং সন্ধ্যায় মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হয়।
তোহাখানা যেতে হলে সর্বপ্রথম আপনাকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ আসতে হবে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ যেভাবে যাবেন-
বাস: ঢাকার বাস স্ট্যান্ড-
- গাবতলী
- আবদুল্লাহপুর
- মহাখালী
- কল্যাণপুর
বাসসমূহ–
- গ্রীন লাইন
- ন্যাশনাল ট্রাভেল
- হানিফ
- একতা
- দেশ ট্রাভেল
উল্ল্যেখ্য, ট্রেন এবং বিমানে গেলে আপনাকে রাজশাহী হয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ যেতে হবে।
ট্রেনসমূহঃ
কমলাপুর বা বিমানবন্দর রেলওয়ে স্টেশন থেকে রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশন পর্যন্ত ট্রেনসমূহ-
- সিল্কসিটি
- ধুমকেতু
- বনলতা
- পদ্মা এক্সপ্রেস
বিমানসমুহঃ
শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে রাজশাহী যাওয়ার ফ্লাইটসমূহ-
- বাংলাদেশ বিমান
- ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্স
- নভোএয়ার
চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে তোহাখানা
শহর থেকে তোহাখানা দূরত্ব প্রায় ৩৫ কি.মি। চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরের যেকোনো জায়গা থেকে বাসে কিংবা অটোরিকশা/গাড়ি রিজার্ভ এর মাধ্যমে মাজার যেতে পারবেন।
থাকা ও খাওয়ার জন্য চাঁপাইনবাবগঞ্জে সবরকম ব্যবস্থা রয়েছে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের রিসোর্টসমূহ–
- হোটেল স্বপ্নপুরী
- হোটেল আল নাহিদ
- হোটেল স্কাই ভিউ
- হোটেল রাজ
- হোটেল নাজমা
উক্ত রিসোর্টসমূহের নাম দিয়ে ইন্টারনেটে সার্চ দিলে বুকিং জনিত সকল তথ্য পেয়ে যাবেন।
চাপাইনবাবগঞ্জের হোটেলসমূহ-
শহরের যেকোনো জায়গায় কিংবা রিসোর্টের আশেপাশে অনেক খাবার হোটেল পাবেন।
তোহাখানা ভ্রমণের সুবিধা হল–
- উন্নত ভ্রমণ সুবিধা
- ইসলামিক জ্ঞানার্জন
- পরিবার/দম্পতি বা বন্ধুদের সাথে উপযুক্ত সময় কাটানো
- সুন্দর এবং মনোরম প্রকৃতি
সতর্কতা–
প্রথমত, গাড়ি বা নৌকা ভ্রমণ, হোটেল বুকিং, খাবার কিংবা কোন কিছু কেনার পূর্বে দর কষাকষি করতে একদম সতর্ক থাকবেন। এছাড়াও-
- প্রয়োজনে ছাতা বা রেইনকোট নিন
- সাঁতার না জানলে গভীর পানিতে নামবেন না
- স্থানীয় গাইডের সাহায্যে পুরো অঞ্চল সুন্দরভাবে ঘুরতে পারবেন
- মাজারের ভদ্রতা বজায় রাখুন
- পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর কিছু এড়িয়ে চলুন
বি.দ্রঃ যেকোনো সমস্যায়, বাংলাদেশের জাতীয় জরুরী সেবা ৯৯৯ এ কল করুন।