বীরশ্রেষ্ঠ ল্যান্স নায়েক মুন্সি আব্দুর রউফের সমাধি
বীরশ্রেষ্ঠ ল্যান্স নায়েক মুন্সি আব্দুর রউফ, যিনি রাঙ্গামাটি জেলার নানিয়ারচরের বুড়িঘাটে কাপ্তাই লেকের ছোট্ট এক দ্বীপে চিরনিদ্রায় শায়িত আছেন। তার বীরত্বের এক অনন্য প্রকাশস্বরূপ সমাধি স্থলে লেখা “তুমি দুর্জয়, নির্ভীক মৃত্যুহীন এক প্রাণ”।
জানা যায়, তিনি ২০ এপ্রিল ১৯৭১ সালে অষ্টম ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের একটি অংশ পার্বত্য চট্টগ্রামের রাঙ্গামাটির মহালছড়ি থানার বুড়িঘাট চিংড়ি খাল এলাকার পাকিস্থানী হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধরত ছিলেন। সেদিন পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী হঠাৎ ভারি অস্ত্র বোঝাই তিনটি লঞ্চ ও দুইটি স্পীড বোট দ্বারা মুক্তিযোদ্ধাদের ঘিরে ফেলে। এই আক্রমনে মুন্সি আব্দুর রউফ মেশিনগান নিয়ে একাই শত্রুদের সাথে লড়াই করে তাঁর সকল সহযোদ্ধাদের নিরাপদে সরে যেতে সাহায্য করেন। যুদ্ধে হানাদার বাহিনীর দুটো লঞ্চ ও একটি স্পীড বোট পানিতে ডুবে যায়, এছাড়াও মারা যায় দুই প্লাটুন সৈন্য। আকস্মিক পাক হানাদার বাহিনীর ছোড়া একটি মর্টারের তীব্র আঘাতে মুন্সি আব্দুর রউফ শাহদাত বরণ করেন। পরবর্তীতে বুড়িঘাট ভাঙ্গামুড়া এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা দয়াল চাকমা তাঁর মরদেহ উদ্ধার করে এবং কাপ্তাই লেকের ছোট্ট দ্বীপে সমাহিত করেন। এরপর ২৫ এপ্রিল ১৯৯৬ সালে, মুন্সি আব্দুর রউফের সহযোদ্ধা ও এলাকাবাসীর সহযোগিতায় সমাধিস্থল চিহ্নিত করা হয়। তার সমাধিস্থলে ২৫ মার্চ ২০০৬ সালে রাইফেলের ভাস্কর্য সংবলিত একটি স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করা হয়।
এখানে রয়েছে-
- নানিয়ারচরের আনারস বাগান
- নদী
- প্রাকৃতিক দৃশ্য
সমাধিস্থলে যেতে হলে সর্বপ্রথম আপনাকে রাঙ্গামাটি/কাপ্তাইআসতে হবে।
রাঙ্গামাটি/কাপ্তাই যেভাবে যাবেন-
বাস: ঢাকার বাস স্ট্যান্ড-
- গাবতলী
- সায়েদাবাদ
- উত্তরা
- মহাখালী
- ফকিরাপুল
বাসসমূহ–
- হানিফ
- শ্যামলী
- এস আলম
- ঈগল
উল্লেখ্য,ঢাকা থেকে রাঙ্গামাটি রেল কিংবা আকাশপথে যাওয়া যায় না।
রাঙ্গামাটি থেকে সমাধিস্থল
রাঙ্গামাটি বাস স্ট্যান্ড থেকে অটোরিকশা/জীপ/প্রাইভেট গাড়ি রিজার্ভ এর মাধ্যমে জেটিঘাট, সেখান থেকে নৌকা ভাড়া করে সমাধিস্থলে যেতে পারবেন।
থাকা ও খাওয়ার জন্য রাঙ্গামাটিতে সবরকম ব্যবস্থা রয়েছে।
রাঙ্গামাটির রিসোর্টসমূহ–
- পর্যটন মোটেল
- রংধনু গেস্ট হাউজ
- হোটেল সুফিয়া
- হোটেল গ্রিন ক্যাসেল
- হোটেল আল–মোবা
উক্ত রিসোর্টসমূহের নাম দিয়ে ইন্টারনেটে সার্চ দিলে বুকিং জনিত সকল তথ্য পেয়ে যাবেন।
রাঙ্গামাটির হোটেলসমূহ-
বাস স্ট্যান্ড কিংবা রিসোর্টের আশেপাশে অনেক খাবার হোটেল পাবেন।
সমাধিস্থল ভ্রমণের সুবিধা হল–
- উন্নত ভ্রমণ সুবিধা
- পরিবার/দম্পতি বা বন্ধুদের সাথে উপযুক্ত সময় কাটানো
- সুন্দর এবং মনোরম প্রকৃতি
- অজানাকে জানা
সতর্কতা–
প্রথমত, গাড়ি বা নৌকা ভ্রমণ, হোটেল বুকিং, খাবার কিংবা কোন কিছু কেনার পূর্বে দর কষাকষি করতে একদম সতর্ক থাকবেন। এছাড়াও-
- প্রয়োজনে ছাতা বা রেইনকোট নিন
- সাঁতার না জানলে গভীর পানিতে নামবেন না
- স্থানীয় গাইডের সাহায্যে পুরো অঞ্চল সুন্দরভাবে ঘুরতে পারবেন
- ট্র্যাকিং এর যাবতীয় প্রস্তুতি নেয়া সুবিধাজনক
- আদিবাসীদের সাথে ভদ্রতা বজায় রাখুন
- পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর কিছু এড়িয়ে চলুন
বি.দ্রঃ যেকোনো সমস্যায়, বাংলাদেশের জরুরী সেবা ৯৯৯ এ কল করুন।