fbpx
পাওনা টাকা আদায় করার পদ্ধতি

পাওনা টাকা আদায় করার পদ্ধতি


অনেক সময় দেখা যায় কিছু অসাধু ব্যক্তি নিজের বিপদের সময় বিভিন্ন ছলোনায় অথবা প্রতারণা করে অন্যের কাছ থেকে টাকা ধার অথবা হাওলাত (করজা) নেয় কিংবা সুদের উপর টাকা নেয়। টাকা দেওয়ার সময় অনেকে বিশ্বাসের উপর টাকা দিয়ে দেয়। কেউ সাদা কাগজে অথবা স্ট্যাম্পের মাধ্যমে লিখিত করে টাকা দেয়। কেউবা ব্যাংকের চেক নিয়েও টাকা দেয়। যেভাবেই হউক টাকা নেওয়ার পর অনেকে সঠিকভাবে টাকা ফেরত দিতে চায় না। ধরুন আপনি সরল মনে কাউকে কিছু টাকা ধার দিয়েছেন কিন্তু এখন সে আর আপনাকে আপনার পাওনা টাকা পরিশোধ করছেনা। অথবা আপনাকে আজ দিবো কাল দিবো বলে ঘুড়াচ্ছে। এক্ষেত্রে পাওনা টাকা কিভাবে আদায় করবেন?

নিয়ম:- পাওনা টাকা আদায় করতে হলে প্রথমে আপনি স্থানীয় ইউনিয়ন/পৌরসভা চেয়ারম্যান এর নিকট লিখিত অভিযোগ করবেন। আপনার অভিযোগের প্রেক্ষিতে ইউনিয়ান/পৌরসভা চেয়ারম্যান অভিযোগের সত্যতা যাচাই করে পাওনা টাকা আদায় করে দেওয়ার ব্যবস্থা গ্রহন করবেন। ইউনিয়ান/পৌরসভা চেয়ারম্যান  টাকা আদায় করতে ব্যর্থ হলে আপনি অভিযুক্তের প্রতি উকিল দ্বারা লিগ্যাল নোটিশ করবেন। তারপর বিজ্ঞ আদালতে অথবা থানায় মামলা দায়ের করবেন। থানায় মামলা করতে হলে উপযুক্ত ডকুমেন্ট যেমন টাকা দেওয়ার স্থান, তারিখ ও সময়, সাক্ষীর নাম ঠিকানা, টাকার পরিমান উল্লেখ আছে এমন লিখিত দলিল/ডকুমেন্ট অথবা ব্যাংকের চেক এজাহারের সংগে সংযুক্ত করতে হবে। আপনার এজাহার পাওয়ার পর থানার অফিসার ইনচার্জ নিয়মিত মামলা রুজু করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করবেন।
চেকের ক্ষেত্রে:- এ ক্ষেত্রে ১৮৮১ সালের নেগোশিয়েবল ইনস্ট্রুমেন্ট আইন (NIA) এর ১৩৮ ধারা মোতাবেক বিজ্ঞ আদালতে মামলা করা যাবে। উক্ত আইনে মামলা করতে হলে চেকের পাতায় উল্লেখিত তারিখ হতে ৬ মাসের মধ্যে ব্যাংক কর্তৃক ডিজঅনার সার্টিফিকেট গ্রহন করে চেক দাতাকে জানাতে হবে। চেক দাতা ১৫ দিনের মধ্যে পাওনা টাকা পরিশোধ করতে ব্যর্থ হলে চেক দাতাকে অবহিত করণের এক মাসের মধ্যেই বিজ্ঞ আদালতে মামলা দায়ের করতে হবে। এখানে উল্লেখ্য যে ১৮৮১ সালের নেগোশিয়েবল ইন্সট্রুমেন্ট আইন (NIA) এর ১৩৮ ধারার মামলা থানায় রুজু করা হয় না।
ধরুন আপনি কাউকে চেক অথবা লিখিত ডকুমেন্ট ছাড়া টাকা ধার বা হাওলাত দিয়েছেন। কিন্তু টাকা ফেরত পাচ্ছেন না। তাহলে আপনি কি করবেন ?
টাকা লেনদেনের ঘটনা দেওয়ানি বিষয় বিধায় লিখিত ডকুমেন্ট ছাড়া পাওনা টাকা আদায় করা সহজ নয়। অতএব, লিখিত ডকুমেন্ট ছাড়া টাকা লেনদেন করা উচিত হবেনা। লিখিত ডকুমেন্ট না থাকলে মামলা ব্যতীত স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের মাধ্যমে আপোষ মিমাংসা সূত্রে আদায় করা যায়।

তথ্যসূত্র-
মোঃ সিরাজুল ইসলাম
(পুলিশ পরিদর্শক)

Leave a Reply