fbpx
আমঝুপি নীলকুঠি

আমঝুপি নীলকুঠি


যা মেহেরপুর জেলা শহরে অবস্থিত এবং বাংলাদেশের প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন গুলোর মধ্যে একটি। মেহেরপুর জেলা থেকে প্রায় ৬ কিমি পূর্বে আমঝুপি নামক গ্রামে এই নীলকুঠিটি অবস্থিত। এটি প্রায় ৭৭ একর বা আনুমানিক ২৩২ বিঘা জায়গাজুড়ে বিস্তৃত। প্রায় ১৮০০ শতকে ইংরেজদের শাসন আমলে আমঝুপি নীলকুঠি প্রতিষ্ঠিত হয় এবং পরবর্তীতে “ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি” এর অফিস হিসেবে ব্যবহৃত হয়। বিভিন্ন ইতিহাসের বর্ণনা থেকে জানা যায় যে মোঘল সেনাপতি মানসিংহ ও নবাব আলীবর্দী খাঁর স্মৃতি বিজরিত এই আমঝুপিতেই পলাশির যুদ্ধের কাল অধ্যায় রচিত হয়েছিল। সেই সময়ে ইংরেজ সেনাপতি লর্ড ক্লাইভ ও মীরজাফর ষড়যন্ত্র করে বাংলার শেষ নবাব সিরাজউদ্দৌলা কে যুদ্ধে পরাজিত করেন, এখান থেকেই বাঙালীর পরাধীন যাত্রা শুরু হয় এবং ব্রিটিশ দের নানারকম অত্যাচার শুরু হয়। যার ইতিহাস সাক্ষী হিসেবে রয়ে গেছে এই আমঝুপি নীলকুঠিতে।

কাজলা নদীর পাশে অবস্থিত এই আমঝুপি নীলকুঠিতে যাওয়ার পর সেখানে প্রবেশের জন্য দুইটি রাস্তা রয়েছে। কমপ্লেক্সটির মাঝখানে ১৫ কক্ষ বিশিষ্ট মূল ভবন রয়েছে। সেই সময়ে এই সব কক্ষ বৈঠকখানা, সংগীত, নৃত্যগীত ও আমোদ-প্রমোদের জন্য ব্যবহার করা হতো। সাথে রয়েছে চারটি সাজঘর ও পরিচালকদের কোয়ার্টার। পশ্চিম দিকে পরিচালক ও সাহায্যকারীদের বসবাসের জন্য যে দালান রয়েছে সেগুলো বর্তমানে কুঠিবাড়ির নিরাপত্তাকর্মী ও তত্বাবধায়কের বাসভবন হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। এছাড়াও কাজলা নদীর ওপর সম্প্রসারিত যে সেতু ও শানবাধানো বসার আসনবেষ্টিত যে ঘাট রয়েছে তা নি:সন্দেহে এই কুঠি এর সবচেয়ে চিত্তাকর্ষক এবং ব্যাতীক্রমধর্মী বৈশিষ্ট্য।

উপমহাদেশে ইংরেজদের শাসন ও নীল চাষের কালো অধ্যায়ের অবসানের পরবর্তীতে এবং ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের পর ১৯৭২ সালে বাংলাদেশ সরকার এই আমঝুপি নীলকুঠি সংরক্ষণের জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেন।


ঢাকা থেকে যাওয়ার উপায়

(আমঝুপি নীলকুঠি যেতে হলে সর্বপ্রথম আপনাকে মেহেরপুর যেতে হবে।) 

বাস

ঢাকার বাস স্টান্ডসমূহ:-

  • গাবতলী
  • কল্যানপুর
বাস সমূহ:-

  • শ্যামলী
  • এস এম রয়েল
  • মেহেরপুর ডিলাক্স

(শহরের যেকোনো জায়গা থেকে বাসে, অটো-রিকশা কিংবা রিকশা রিজার্ভ এর মাধ্যমে আমঝুপি নীলকুঠি যেতে পারবেন।)


থাকা ও খাওয়ার ব্যবস্থা

(থাকা ও খাওয়ার জন্য মেহেরপুরে সবরকমের ব্যবস্থা রয়েছে।)

আবাসিক হোটেলসমূহ

  • মেহেরপুর পৌর গেস্ট হাউজ
  • সোহাগ গেস্ট হাউজ
  • মেহেরপুরে হোটেল রনি
  • হোটেল অনাবিল
  • হোটেল নাইট বিলাস
  • হোটেল ফিন টাওয়ার
  • হোটেল প্রিন্স

(উক্ত আবাসিক হোটেলসমূহের নাম দিয়ে ইন্টারনেটে সার্চ দিলে বুকিং সম্পর্কিত সকল তথ্য পেয়ে যাবেন।)

রেস্টুরেন্টসমূহ

(শহরের যেকোনো জায়গায় কিংবা আবাসিক হোটেলের আশেপাশে অনেক রেস্টুরেন্ট পাবেন।)


আমঝুপি নীলকুঠি ভ্রমণের সুবিধা হল

  • উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা।
  • পরিবার/দম্পতি বা বন্ধুদের সাথে উপযুক্ত সময় কাটানোর সুবিধা।
  • সুন্দর এবং মনোরম পরিবেশ।

পরামর্শ: প্রথমত, গাড়ি বা নৌকা ভ্রমণ, হোটেল বুকিং, খাবার কিংবা কোন কিছু কেনার পূর্বে দর কষাকষিতে সর্বদা সতর্ক থাকবেন। এছাড়াও-

  • প্রয়োজনে ছাতা বা রেইনকোট নিন।
  • স্থানীয় গাইডের সাহায্যে পুরো অঞ্চল সুন্দরভাবে ঘুরতে পারবেন।
  • পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর কিছু এড়িয়ে চলুন।
দৃষ্টি আকর্ষণ : যে কোন পর্যটন স্থান আমাদের সম্পদ, আমাদের দেশের সম্পদ। এইসব স্থানের প্রাকৃতিক কিংবা সৌন্দর্য্যের জন্যে ক্ষতিকর এমন কিছু করা থেকে বিরত থাকুন, অন্যদেরকেও উৎসাহিত করুন। দেশ আমাদের, দেশের সকল কিছুর প্রতি যত্নবান হবার দায়িত্বও আমাদের।
 
সতর্কতা: হোটেল, রিসোর্ট, যানবাহন ভাড়া ও অন্যান্য খরচ সময়ের সাথে পরিবর্তন হয় তাই উল্লিখিত তথ্য বর্তমানের সাথে মিল নাও থাকতে পারে। তাই অনুগ্রহ করে আপনি কোথাও ভ্রমণে যাওয়ার আগে বর্তমান ভাড়া ও খরচের তথ্য জেনে পরিকল্পনা করবেন।
 
বি.দ্রঃ যেকোনো সমস্যায়, বাংলাদেশের জাতীয় জরুরী সেবা – ৯৯৯ এ কল করুন।

যেকোন তথ্য অথবা ভ্রমণ সহায়তার জন্য যোগাযোগ করুন অথবা কমেন্ট করুন-
ইমেইলadmin@biratbazar.com

Leave a Reply