ইমাম নাসায়ী (রহ.) এর জীবনী ও সুনানে নাসায়ীর বৈশিষ্ট্য
ইমাম নাসায়ী (রহ.) এর জীবনী ও সুনানে নাসায়ীর বৈশিষ্ট্য
‘সিহাহ সিত্তাহ’ সংকলকদের মধ্যে ইমাম নাসায়ী (রহ.) ছিলেন অন্যতম। সিহাহ সিত্তাহর অন্তর্ভূক্ত তাঁর সংকলিত সুনানটি সুনানে নাসায়ী নামে পরিচিত। তিনি খোরাসানের নাসা নগরীর অধিবাসী ছিলেন। ছাত্র হিসেবে হাদিস শিক্ষার পর হাদিস শিক্ষাদানে আত্মনিয়োগ করেন। তিনি অগণিত মুহাদ্দিস তৈরীর কারিগর ছিলেন। যারা পবর্তীতে ইলমে হাদিস সংরক্ষণ ও সংকলনে ব্যাপক অবদান রেখেছেন। ইমাম নাসায়ী (রহ.) শুধু হাদিসের শিক্ষাদান দিয়েই থেমে থাকেননি বরং হাদিসের প্রচার ও প্রসার ও পরবর্তী প্রজন্মের কাছে হাদিসের দাওয়াত পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে অনেক হাদিস গ্রন্থ ও রচনা করেছেন। হাদিস শাস্ত্রের অন্যতম দিকপাল ইমাম নাসায়ী (রহ.)-এর জীবনী তুলে ধরা হলো:-
→ ইমাম নাসায়ী (রহ.)-এর পরিচয়:-
১. নাম ও বংশধারা:
ইমাম নাসায়ী (রহ.)-এর প্রকৃত নাম: আহমদ। উপনাম: আবূ আব্দির রহমান। পিতার নাম: শুআয়ব । তাঁর বংশ পরিক্রমা : আহমাদ ইবন শুআয়ব ইবন সিনান ইবন বাহর ইবন দীনার আল খুরাসানী আন-নাসায়ী ।
২. জন্ম ও জন্মস্থান:
ইমাম নাসায়ী (রহ.) ২১৫ হিজরি মোতাবেক ৮৩০ খ্রীস্টাব্দে খুরাসানের নাসা নামক স্থানে জন্মগ্রহণ করেন। কোন কোন রিজাল শাস্ত্রবিদের মতে, তিনি ২১৪ হিজরি সালে জন্মগ্রহণ করেন। কিন্তু এ মতটি বিশুদ্ধ নয়। কারণ ইমাম নাসায়ী (রহ.) কে তাঁর জন্মসাল সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন – “সম্ভবত আমার জন্মসাল ২১৫ হিজরি।”
(সূত্র : তাহযীবুত তাহযীব, ১ম খণ্ড, পৃ-৬৯)
এ সম্পর্কে—Dr, Muhammad Zubayar siddiqi বলেন- ‘Another Important Sunan work is that compiled by Abu Abd al-Rahman Ahmad b. Shuayab al Nasai who was born in the year 214 or 215 A. H. at ‘nasa’ a town in Khurasan.(সূত্র : Hadith Literature, p-112-113)
৩. বাল্যকাল ও প্রাথমিক শিক্ষা:
ইমাম নাসায়ী (রহ.)-এর প্রাথমিক শিক্ষা নিজ জন্মভূমি নাসাতে শুরু হয় এবং নিজ গ্রামেই তিনি প্রাথমিক শিক্ষা সমাপ্ত করেন। আট বছর বয়সে তিনি পবিত্র আল কুরআন মুখস্ত করেন। শৈশবকাল থেকেই তিনি অত্যন্ত স্মৃতি শক্তির অধিকারী ছিলেন । ফলে বাল্যকাল থেকেই তিনি ইলমে নাহু, সরফ, ফিকহ, উসূলুল ফিকহ এবং হাদিস শিক্ষা করতে আরম্ভ করেন।
৪. উচ্চশিক্ষার্থে বিদেশ ভ্রমণ:
প্রাথমিক শিক্ষা সমাপ্ত করে ইমাম নাসায়ী (রহ.) উচ্চ শিক্ষার জন্য বিভিন্ন দেশ ও শহর পরিভ্রমণ করেন। তিনি সর্বপ্রথম ২৩০ হিজরি সালে পনের বছর বয়সে নিজ দেশ ত্যাগ করে বলখ গমন করেন। সেখানে তিনি মুহাদ্দিস কুতাইবা ইবন মাঈদুল বালখীর (রহ.) নিকট উপস্থিত হয়ে তার শিষ্যত্ব গ্রহণ করেন। ইমাম নাসায়ী (রহ.) তাঁর নিকট একবছর দু’মাস অবস্থান করে হাদিস শাস্ত্রে জ্ঞানার্জন করেন।
এ সম্পর্কে ড. যুবাইর সিদ্দীকী বলেন- “Having received his early education in his own province, he went at the age of 15 to Balkh, where he studied traditions with Qutayba b. said for more than a year.” (সূত্র: Hadith citerature. p-112-113)
অতঃপর তিনি মিসরে গমন করেন এবং সেখানে দীর্ঘদিন অবস্থান করেন। এ গ্রন্থসমূহ জনগণের মধ্যে বিশেষখ্যাতি অর্জন করে। লোকেরা এসময়েই তার নিকট থেকে হাদিস শ্রবণ করতে আরম্ভ করেন। মিসর থেকে ৩০২ হিজরি সালে ইমাম নাসায়ী (রহ.) দিমাশক গমন করেন।
৫. শিক্ষকবৃন্দ:
ইমাম নাসায়ি (রহ.) উচ্চ শ্রেণির অসংখ্য আলেমের নিকট থেকে হাদিস শ্রবণ ও গ্রহণ করেন। হাফিয শামসুদ্দীন আয যাহাবী ‘সিয়ারু আলমিন নুবালা’ গ্রন্থে তাঁর ৭০ জন শিক্ষকের নামের একটি দীর্ঘ তালিকা পেশ করেছেন। ‘সুনানু সুগরাতে’ ইমাম নাসায়ীর শিক্ষকের সংখ্যা ৩৩৪ জন বলে উল্লেখ করা হয়েছে। সুনান কুবরাতে ৪৫০ জনের বলে উল্লেখ করা হয়েছে। হাফিয ইবন হাজার ইমাম বুখারী (রহ.) কেও ইমাম নাসায়ীর উস্তাদ বলে উল্লেখ করেছেন। (সূত্র : মুহাদ্দিসীন-ই-ইমাম, পৃ.-২৪১)
৬. ছাত্রবৃন্দ:
ইমাম নাসায়ী (রহ.) শিক্ষা গ্রহণের পাশাপাশি শিক্ষাদানের ক্ষেত্রে যথেষ্ট অবদান রেখে গেছেন। বহু ছাত্র তার নিকট শিক্ষা গ্রহণ করে ধন্য হয়েছেন। তার ছাত্রদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন— ইবরাহীম ইবন ইসহাক আল ইসকান্দারী, মুহাম্মদ ইবন আহমদ আর-রাফিকী, ইবন শুয়ারব আল আনসারী আদ-দিমাশকী, আল মারুফ আল আখরাম প্রমুখ।
৭. স্বভাব-চরিত্র:
ইমাম নাসায়ী (রহ.) অত্যন্ত আল্লাহ ভীরু ছিলেন। তিনি রাসূলের সুন্নাতের প্রতি একনিষ্ঠ ছিলেন এবং বিদআতের কঠোর বিরোধী ছিলেন। তিনি প্রায়ই রোযা ব্রত থাকতেন এবং রাতদিন আল্লাহর ইবাদত নিয়োজিত থাকতেন। তিনি হযরত দাউদ (আ.) এর ন্যায় একদিন পর একদিন রোযা রাখতেন। তিনি সত্যভাষী, সহিষ্ণু, ধৈয্যশীল এবং অসাধারণ ব্যক্তিত্ব সম্পন্ন ছিলেন। তিনি দেখতে খুব সুন্দর ছিলেন। এমনকি বৃদ্ধ বয়সেও তার সৌন্দর্য এতটুকু ম্লান হয়নি। পোষাক পরিচ্ছেদ পরিধানের ব্যাপারেও তিনি সজাগ ছিলেন । রঙ্গীন ও দামী পোষাক ব্যবহার করতেন।
৮. মাযহাব:
ইমাম নাসায়ী (রহ.) কোন মাযহাবের অনুসারী ছিলেন এ সম্পর্কে মুহাদ্দিসগণের মধ্যে মতানৈক্য পরিলক্ষিত হয়। ইবনুল আসীর (রহ.) বলেন— “ইমাম নাসায়ী (রহ.) ছিলেন শাফিঈ মাযহাবের অনুসারী। শাফিঈ মাযহাবের উপর তাঁর অনেক মাসআলা- মাসায়িল রয়েছে । তিনি ছিলেন পরহেযগার এবং বিবেচনা করে পদক্ষেপ গ্রহণকারী ব্যক্তি।” (সূত্র : জামিউল উসূল, ১ম খণ্ড, পৃ-১৯১)
আনোয়ার শাহ কাশ্মীরী (রহ.) বলেন – كانَ النِسَائِي رَحِمَهُ اللهُ تَعَالَى مِنَ الحَنَابِلَةِ
অর্থাৎ- নাসায়ি (রহ.) ছিলেন হাম্বলী মাযহারের অনুসারী। (সূত্র : ফায়যুল বারী, ১ম খণ্ড, পৃ-৮৫)
প্রকৃত পক্ষে ইমাম নাসায়ী (রহ.) নির্দিষ্ট কোন মাজাহাবের অনুসারী ছিলেন না। তিনি ছিলেন স্বাধীন চিন্তার অধিকারী। তিনি মাসআলা, ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণে আল-কুরআন ও হাদিসে সুষ্ঠু সমাধান না পেলে ইজতিহাদ করতেন কিংবা ইমামগণের অভিমত গ্রহণ করতেন। এক্ষেত্রে তিনি ইমাম শাফিঈ (রহ.) ও ইমাম আহমদ ইবন হাম্বল (র)-এর অভিমত কে প্রাধান্য দিতেন।
৯. গ্রন্থরচনা:
ইমাম নাসায়ী (রহ.) এর জীবনে শ্রেষ্ঠ কীর্তি ‘সুনানে নাসায়ী’ । সহিহ বুখারী ও সহিহ মুসলিম এর পরই সুনানে নাসায়ী’ এর স্থান । তাছাড়া তিনি ইলমে হাদিস, ফিকহ ও অন্যান্য বিষয়ে জ্ঞান অর্জনের পর গ্রন্থ রচনায় আত্মনিয়োগ করেন। তার উল্লেখযোগ্য গ্রন্থাদি নিম্নরূপ-
উমাইয়াগণ কর্তৃক নির্মম প্রহারের ফলে ইমাম নাসায়ী (রহ.) মারাত্মকভাবে আহত হন। তিনি শেষ ইচ্ছা হিসেবে তাঁকে মক্কায় পৌঁছে দিতে অনুরোধ করেন, যেন সেখানেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করতে পারেন। আশংকাজনক ভাবে তাঁকে মক্কায় নেয়া হলে সেখানে হিজরি ৩০৩ সালে তিনি ইন্তিকাল করেন। কোন কোন ঐতিহাসিকের মতে- ইমাম নাসায়ী (রহ.) কে মুমূর্ষ অবস্থায় ফিলিস্তীনের ‘রামাল্লা’ নামক স্থানে নিয়ে আসা হয়। সেখানেই তিনি ১৩ই সফর (৩০৩/৯১৫) ইন্তিকাল করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স ছিল ৮৮ বছর।
এ প্রসংগে Dr. Muhammad Zubayar siddiqi বলেন- “He was seriously injuried and could not live long after this incident. He died in the year 303/915.” (সূত্র : Hadith litereature, P. 112-113)
ইমাম নাসায়ী (রহ.) ছিলেন হিজরি তৃতীয় শতাব্দীর ইলমে হাদিসের ইমাম ও সমালোচক। তিনি সিহাহ সিত্তাহর ইমামগণের মধ্যে সর্বকনিষ্ঠ ছিলেন। তিনি হাদিস শাস্ত্রে জ্ঞানার্জনের জন্য বিভিন্ন দেশ পরিভ্রমণ করেন হাদিস শাস্ত্রে পাণ্ডিত্য অর্জন করেন। তিনি হাদিস সংগ্রহ করে প্রথমে ‘সুনানুল কুবরা’ নামে হাদিসগ্রন্থ সংকলন করেন। পরবর্তীতে এটি থেকে যাচাই করে বিশুদ্ধ একটি হাদিস গ্রন্থ সংকলন করেন এবং এর নামকরণ করেন ‘আল মুজতাবা’। এই গ্রন্থটি ‘আস সুনানন’ বা ‘সুনানে নাসায়ী’ নামে সর্বাধিক প্রসিদ্ধ লাভ করেছে। বিশুদ্ধতার দিক থেকে এ গ্রন্থটির স্থান সহীহুল বুখারী ও সহিহ মুসলিম এর পরেই। আর সুনান গ্রন্থ সমূহের মধ্যে সুনানে নাসায়ী অধিকতর ব্যাপক।
→ সুনানে নাসায়ীর বৈশিষ্ট্য:-
সুনানে-নাসায়ী সিহাহ সিত্তার মধ্যে তৃতীয় অধ্যায়নে অনেকগুলো বৈশিষ্ট্য পরিলক্ষিত হয়-
১. সুনানে-নাসা-এর অন্যতম বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, এ গ্রন্থে ‘ইলালে হাদিস (হাদিসের সূক্ষ্ম দোষগুণ) সম্পর্কিত একটি পৃথক অধ্যায় যোজিত রয়েছে। সেখানে হাদিসের ‘ইল্লাত সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা এবং ‘ইল্লাতে হাদিস সম্পর্কে সতর্ক বাণী বর্ণনা করা হয়েছে। এ সম্পর্কে হাফিজ আল মাকদাসী বলেন-
“তিনি রাবীর ত্রুটি-বিচ্যুতি অতি সুন্দরভাবে বর্ণনা করেন। আর যে রাবীর মধ্যে সন্দেহ তীব্র এবং যার ভূল-ভ্রান্তি স্পষ্ট ও অধিক তিনি এরুপ রাবীর হাদিসও আপন গ্রন্থে বর্ণনা করেননি।
২. ইমাম নাসায়ী তাঁর সুনান গ্রন্থে ইমাম বুখারী ও ইমাম মুসলিম (রহ.)-এর পদ্ধতি অনুসরণ করে হাদিস সংকলন করেন বরং এতদুভায়ের শর্তাবলির চেয়ে তাঁর শর্তাবলি আরও বাস্তবসম্মত।
(সূত্র : আল-হাদিসুন-নববী, পৃঃ ৩৮৮)
৩. এ গ্রন্থটিতে ফিক্হী তারতীব অনুসারে অধ্যায় ও পরিচ্ছেদে সাজানো হয়েছে। যেমন- গ্রন্থটির শুরু হয়েছে কিতাবুত্-তাহারাত এর মাধ্যমে। এরপর আবওয়াবুস্-সালাত, কিতাবুস-সিয়াম, কিতাবুয্-যাকাত, কিতাবুল-মানাসিক ইত্যাদি সন্নিবেশিত হয়েছে।
৪. রাবীর নির্ভরযোগ্যতা ও বিশ্বস্ততা প্রসংগেও এখানে তুলে ধরা হয়েছে এবং ইমাম নাসায়ী এক্ষেত্রে বস্তুনিষ্ঠ মন্তব্য পেশ করেছেন।
৫. এ গ্রন্থে রাবীগণের (বর্ণনাকারীগণের) নাম, উপনাম, উপাধি প্রভৃতির বিস্তারিত বর্ণনা তুলে ধরা হয়েছে।
ড. মুহাম্মদ সাব্বাগ বলেন-
هُوَ أقل الكتب السُّنَّة بَعْدَ الصَّحِيحَيْنِ ضَعِيفًا،
وَلِذَلِكَ ذَكَرُوه بَعْدَ الصَّحِيحَيْنِ فِي الْمَرتبَةِ ، لأَنَّهُ أَشدُّ انْتِقَادَ اللرِّجَالَ وَشَرْطَه أَبي داود
وَالتَّرْمِذِي وَغَيْرِهما –
অর্থাৎ, ‘ইমাম নাসায়ী (রহ.)-এর হাদিস গ্রন্থটি সিহাহ সিত্তার মধ্যে য’ঈফ হাদিসের উপস্থিতির দিক থেকে সর্বাধিক কম। একারণেই হাদিসবিদগণ এ গ্রন্থটিকে সহিহায়নের পরবর্তী স্থানে উল্লেখ করেছেন। কেননা, রাবীগণের যাচাই-বাছাইয়ের ক্ষেত্রে তিনি ছিলেন খুবই কঠোর । আর তার শর্ত আবূ দাউদ, তিরমিযী প্রমুখগণের শর্ত থেকে অধিক কঠোর।’
(সূত্র : আল-হাদিসুন্-নববী, পৃ: ৩৮৮)
৬. সুন্দর বিন্যাস ও চমৎকার উপস্থাপনার মাধ্যমে এ গ্রন্থটি সুষমামণ্ডিত ।
৭. রচনা ও বিন্যাসের দিক দিয়ে ইমাম নাসায়ীর সুনান গ্রন্থখানা অনন্য। হাফিয আবূ ‘আবদিল্লাহ ও ইব্ন রুশদ (মৃত ৭৬১ হিজরি) এ প্রসঙ্গে বলেন- إِنَّهُ أَبْدَعُ الْكُتُبِ الْمُصَنْفَةَ فِي السُّنَنِ تَصْنِيفًا وَأَحْسَنُهَا تَرْصِيفًا
-“সুনান পদ্ধতিতে যত গ্রন্থ প্রণীত হয়েছে তন্মধ্যে রচনা ও বিন্যাসের দিক দিয়ে সুনানে নাসায়ী অভিনব ও উৎকৃষ্ট।
৮. ইমাম নাসায়ীর সুনান গ্রন্থের হাদিসগুলো ছহীহ ও বিশুদ্ধ। এ সম্পর্কে হাফিজ আবূল হাসান মুয়াফেরী (মৃত ৪০৩ হিজরি) বলেন-
‘হাদিসবেত্তাগণের সংগৃহীত হাদিসগুলোর দিকে দৃষ্টিপাত করলে দেখা যায় যে সকল হাদিস ইমাম নাসায়ী তাঁর গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন, তা অন্যদের সংগৃহীত হাদিসের তুলনায় বিশুদ্ধ।’
(সূত্র : ফাতহুল মুগীছ, পৃ.১২)
৯. নাসায়ীতে য’ঈফ হাদিস চিহ্নিত করা হয়েছে এবং য’ইফ হওয়ার কারণও তুলে ধরা হয়েছে। হাদিসের সনদে কোন রারী দুর্বল থাকলে ইমাম নাসায়ী (রহ.) সেই রাবীর দুর্বল হওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করেছেন ।
১০. কোন কোন রাবী একটি হাদিসের মতন অন্য হাদিসের সাথে মিলিয়ে দিয়েছেন এক্ষেত্রে ইমাম নাসায়ী (রহ.) স্পষ্টভাবে হাদিসের মূল মতন নির্ধারণ করেছেন এবং মিলিয়ে যাওয়া মতনের কারণ ব্যাখ্যা করেছেন ।
ইমাম নাসায়ী (রহ.) ছিলেন হিজরি তৃতীয় শতাব্দীর ইলমে হাদিসের ইমাম ও প্রধান সমালোচক। তিনি সিহাহ সিত্তার ইমামগণের মধ্যে সর্বকনিষ্ঠ ছিলেন। তিনি হাদিস শাস্ত্রে জ্ঞানার্জনের জন্য পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ পরিভ্রমণ করে হাদিস শাস্ত্রে পাণ্ডিত্য অর্জন করেন। ইমাম নাসায়ী এর সংকলিত গ্রন্থ ‘সুনানে নাসায়ী’ সুনান গ্রন্থসমূহের অধিকতর ব্যাপক এবং অনন্য বৈশিষ্ট্যে পরিপূর্ণ। এ গ্রন্থে মানুষের ব্যবহারিক জীবনের প্রায় সকল দিক সম্পর্কিত হাদিস উল্লেখ রয়েছে। ফলে প্রতিটি মুমিনের জীবন চলার পথকে মসৃণ ও সাবলিল করতে হবে ‘সুনানু নাসায়ী’-এর ভূমিকা অনস্বীকার্য।
ইমাম নাসায়ী (রহ.) এবং সুনানে নাসায়ী সম্পর্কে আরো জানতে যোগাযোগ করুণ আমাদের ইমেইলে-
উপমহাদেশের সর্বপ্রথম ও সর্বপ্রাচীন প্রতিষ্ঠিত ও সর্ববৃহৎ চা বাগান মালনীছড়া বাংলাদেশের সিলেট সদর উপজেলার ৩নং খাদিম নগর ইউনিয়নের এয়ারপোর্ট রোডে… Read More
মেঘলা পর্যটন কমপ্লেক্স বান্দরবান জেলার প্রবেশ পথে (বান্দরবান-কেরাণীহাট) সড়কের পাশে পার্বত্য জেলা পরিষদ সংলগ্ন এলাকায় অবস্থিত। এটি বান্দরবান শহর থেকে… Read More
বাকলাই জলপ্রপাত বাংলাদেশের বান্দরবন জেলার থানচি উপজেলার নাইটিং মৌজার বাকলাই গ্রামে অবস্থিত। স্থানীয়দের নিকট “বাক্তলাই ঝর্ণা” নামেও পরিচিত। মুলত কেওক্রাডং… Read More
Leave a Comment