ঈদুল ফিতরে মুসলিমদের করণীয়

ঈদুল ফিতর (আরবি: عيد الفطر, অর্থ: “রোজা/উপবাস ভাঙার আনন্দ”) ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের ধর্মীয় পরিভাষায় একে ‍ইয়াওমুল জায়েজ‍ (অর্থ: পুরস্কারের দিবস) হিসেবেও বর্ণনা করা হয়েছে। দীর্ঘ এক মাস রোজা রাখা বা সিয়াম সাধনার পর এই দিনটি ধর্মীয় কর্তব্যপালনসহ খুব আনন্দের সাথে আমরা পালন করে থাকে। 

শত যোজনের কত মরুভূমি পারায়ে গো,
কত বালুচরে কত আঁখি- ধারা ঝরায়ে গো,
বরষের পরে আসিল ঈদ! (কাজী নজরুল ইসলাম)

কিছু হাদিস অনুসারে, মক্কা থেকে মোহাম্মাদ (সাঃ) হিজরতের পর এই উৎসবগুলো মদিনায় শুরু হয়েছিল। হিজরী বর্ষপঞ্জী অনুসারে রমজান মাসের শেষে শাওয়াল মাসের ১ তারিখে ঈদুল ফিতর উৎসব পালন করা হয়। চাঁদ দেখা সাপেক্ষে ঈদের আগের রাতকে ইসলামী পরিভাষায় ‍‍লাইলাতুল জায়জা‌ (অর্থ: পুরস্কার রজনী) এবং প্রচলিত ভাষায় “চাঁদ রাত” বলা হয়। শাওয়াল মাসের চাঁদ অর্থাৎ সূর্যাস্তে একফালি নতুন চাঁদ দেখা গেলে পরদিন ঈদ হয়, এই কথা থেকেই চাঁদ রাত কথাটির উদ্ভব। ইসলামি বিধানমতে ঈদের চাঁদ স্বচক্ষে দেখে তবেই ঈদের ঘোষণা দিতে হয়। কোনো দেশের নির্দিষ্ট কোনো স্থানে স্থানীয়ভাবে চাঁদ দেখা গেলে যথাযথ প্রমাণ সাপেক্ষে সমগ্র দেশে ঈদের দিন নির্ধারণ করা হয়।


আমরা মুসলিম। রাসূল (সাঃ) আমাদের জন্য দুটি উৎসবের ব্যবস্থা করেছেন। প্রথমটি হলো ঈদুল ফিতর আর দ্বিতীয়টি হলো ঈদুল আযহা। শরিয়ত অনুমোদিত এই দুটি উৎসব ছাড়া আর কোন উৎসব নাই। রাসূল (সাঃ) এর জীবনাদর্শন থেকে জেনে নিবো ঈদুল ফিতরে মুসলিমদের করণীয় গুলো কি কি।

ঈদুল ফিতরে মুসলিমদের করণীয়ঃ-

১. আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত; তিনি বলেন: “রাসূল (সাঃ) ঈদুল ফিতরের দিন ঈদগাহে যাবার পূর্বে কিছু সংখ্যক ( বিজোড়) খেজুর না খেয়ে যেতেন না”। ( সহীহ বুখারী)

২. জাবির (রাঃ) হতে বর্ণিত ; তিনি বলেন: “রাসূল (সাঃ) ঈদগাহে (যাতায়াতকালে) রাস্তা বদলাতেন”। (বুখারী)

৩. আবু সাঈদ (রাঃ) হতে বর্ণিত ; তিনি বলেন: “নবী করীম (সাঃ) ঈদের পূর্বে কোন সালাত আদায় করতেন না। যখন তিনি বাড়ি ফিরতেন, দু’রাকাত সালাত পড়তেন”। (ইবনে মাজাহ)

৪. আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত ; তিনি বলেন: “নবী করীম (সাঃ) আযান এবং ইক্বামাত ব্যতীতই ঈদের সালাত পড়েছেন”। (বুখারী)

৫. উম্মে আত্বীয়াহ (রাঃ) হতে বর্ণিত ; তিনি বলেন : “আমরা রাসূল (সাঃ) কতৃক প্রারম্ভিকা যুবতী ও ঋতুবতী নারীদেরকে ঈদগাহ নিয়ে যাওয়ার জন্য আদেশ প্রাপ্ত হয়েছিলাম। তারা উপস্থিত হবে পুন্যময় কাজে এবং মুসলিম সাধারনের সাথে দু’য়ায় অংশ গ্রহণ করবে। তবে ঋতুবতী মহিলাগণ সালাত আদায় হতে আলাদা থাকবে”। (সহীহ বুখারী)

৬. আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত ; “নবী করীম (সাঃ) ঈদের সালাত মাত্র দু’ রাকাত আদায় করছেন। তার পূর্বে বা পরে কোন সালাত আদায় করেননি”। (সহীহ বুখারী)

Leave a Comment

Recent Posts

মালনীছড়া চা বাগান

উপমহাদেশের সর্বপ্রথম ও সর্বপ্রাচীন প্রতিষ্ঠিত ও সর্ববৃহৎ চা বাগান মালনীছড়া বাংলাদেশের সিলেট সদর উপজেলার ৩নং খাদিম নগর ইউনিয়নের এয়ারপোর্ট রোডে… Read More

1 week ago

Malnicherra Tea Garden

The Malnicherra Tea Garden, the oldest and largest established tea plantation in the Indian subcontinent, is located on the outskirts… Read More

1 week ago

হযরত শাহজালাল রহ.

শাহ জালাল (রাহ.) বাংলার একজন প্রখ্যাত সুফি দরবেশ। শুধু বাংলার নয়, সম্পূর্ণ পাক-ভারতীয় উপমহাদেশে তিনি বিখ্যাত। পুরো নাম শাহ জালাল… Read More

1 month ago

মেঘলা পর্যটন কমপ্লেক্স

মেঘলা পর্যটন কমপ্লেক্স বান্দরবান জেলার প্রবেশ পথে (বান্দরবান-কেরাণীহাট) সড়কের পাশে পার্বত্য জেলা পরিষদ সংলগ্ন এলাকায় অবস্থিত। এটি বান্দরবান শহর থেকে… Read More

2 months ago

Meghla Tourism Complex

Meghla Tourism Complex is located at the entrance of Bandarban district, along the Bandarban-Keranihat road, adjacent to the Hill District… Read More

2 months ago

বাকলাই জলপ্রপাত

বাকলাই জলপ্রপাত বাংলাদেশের বান্দরবন জেলার থানচি উপজেলার নাইটিং মৌজার বাকলাই গ্রামে অবস্থিত। স্থানীয়দের নিকট “বাক্তলাই ঝর্ণা” নামেও পরিচিত। মুলত কেওক্রাডং… Read More

3 months ago