Categories: Travel Guide

সীতাকুণ্ড ইকো পার্ক

সীতাকুণ্ড ইকো পার্ক


সীতাকুন্ড ইকোপার্কের আরেকটি নাম বোটানিক্যাল গার্ডেন ও ইকোপার্ক। এটি চট্টগ্রাম শহর থেকে ৩৫ কিলোমিটার দূরে সীতাকুন্ড উপজেলায় চন্দ্রনাথ পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত। চট্টগ্রাম শহর থেকে মাত্র ৪০ মিনিটের পথ সীতাকুন্ড আর সীতাকুন্ড বাজার থেকে মাত্র ২ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে দক্ষিণে ফকিরহাট বাজার সংলগ্ন মহাসড়কের পূর্ব পার্শ্বে গেলেই সীতাকুন্ড বোটানিকাল গার্ডেন ও ইকোপার্ক। পার্কের ভিতর রয়েছে পাহাড়ের বিশাল বনভূমি, বন্যপ্রাণী, জলপ্রপাত, পাখি ও হরেক রকম বৃক্ষরাজির মনোরম পরিবেশ। এছাড়াও রয়েছে সুপ্তধারা ও সহস্রধারা নামক দুইটি ঝর্ণা সহ ঝিরিপথের ছোট বড় কয়েকটি ঝর্ণা ও কৃত্রিম লেক। ঝর্ণায় যেতে হলে পাহাড়ের উঁচু নিচু ও আঁকাবাঁকা পথ পাড়ি দিতে হয়। সূর্যাস্তের সময় গোধূলির লালচে আভা পার্কটিকে খুব সুন্দর করে তোলে।

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম সীতাকুন্ডের পাহাড় ও ঝর্ণার সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে “আকাশে হেলান দিয়ে পাহাড় ঘুমায় ঐ” গানটি রচনা করেন। ইকোপার্কের  ভিতর এর ফলক দেখা যায়। অর্থাৎ মূল ফটক পেরিয়ে একটু এগোলেই দেখা মেলে জাতীয় কবির স্মৃতিস্তম্ভ। এর কিছুদূর গেলেই পার্কটির দর্শনীয় স্থান নির্দেশিত একটি মানচিত্র দেখা যায়। সেখানে নির্দেশিত পথ ধরে দেড় কিলোমিটার পথ পেরলেই সুপ্তধারা ঝর্ণার সাইনবোর্ড। যেখান লেখা আছে-

“সুপ্তধারা ঘুমিয়ে পড়ি
জেগে উঠি বরষায়”
সেখান থেকে এক কিলোমিটার পাহাড়ি ট্রেইল পেরিয়ে ‘সুপ্তধারা’ ঝর্ণা। আবার এক কিলোমিটার পথ পেরলেই চোখে পড়বে সহস্রধারা ঝর্ণার সাইনবোর্ড। এই এক কিলোমিটার পথে রয়েছে পিকনিক স্পট, ওয়াচ টাওয়ার, হিম চত্ত্বর। সেখানে থেকে দূরে সমুদ্রের রুপ চোখে পরে। সহস্র ধারা ও সুপ্তধারা থেকে বহমান জলপ্রবাহকে ব্যবহার করে কৃত্রিম বাঁধ নির্মাণ করে গড়ে তোলা হয়েছে কৃত্রিম হ্রদ। আবার সহস্রধারার পর বোটানিকাল গার্ডেনের উত্তরে গেলে চোখে পড়বে পাহাড়। বোটানিকাল গার্ডেনের পাহাড়ের উপর থেকে বঙ্গোপসাগর দেখা যায়। পাহাড়গুলো উত্তর-দক্ষিণে লম্বালম্বিভাবে বিস্তৃত। নিচু পাহাড়ের উচ্চতা ১৫ থেকে ১৮ মিটার এবং উঁচু পাহাড়ের উচ্চতা প্রায় ১৫০-৩৬৫ মিটার। চন্দ্রনাথ পাহাড়ের উচ্চতা ৪১০ মিটার। পাহাড়গুলো প্রধানত স্ট্যান্ড-স্টোন ও শেল দ্বারা গঠিত। ভূতাত্ত্বিকভাবে এ পাহাড়গুলো গারো পর্বতমালার অংশ বিশেষ। এ অঞ্চলের জলবায়ু আদ্র উষনমন্ডলীয়।

বোটানিক্যাল গার্ডেন ও ইকোপার্কের প্রধান আকর্ষণ

সুপ্তধারা ঝর্ণা: দেশের অন্যতম ঝর্ণাগুলোর একটি সুপ্তধারা ঝর্ণা। যাদের দীর্ঘ পথ হাঁটার এবং ট্র্যাকিং এর অভ্যাস নেই তাদের জন্য এই ঝর্ণাটি উত্তম। কেননা এক দেড় ঘন্টার পাহাড়ি পথ ও ৪০০/৫০০ সিঁড়ি বেয়ে আরো আধা ঘন্টা ট্র্যাকিং এর পরপরই এই ঝর্ণার দেখা মেলে। অন্য সকল ঝর্ণার থেকে এখানে কম হাটতে ও ট্র্যাকিং করা লাগে। বর্ষায় আসলে এখানে পাথরের দেয়ালগুলোতে দেখা মেলে বুনো গাছপালা, শ্যাওলা এবং ঘাসের উপর দিয়ে বয়ে যায় পানির স্রোত।

সহস্রধারা: প্রায় ২০০ ফুট উঁচুতে চমৎকার সুন্দর প্রকৃতির ভিতর সৃষ্টিকর্তার এক অপরুপ স্থাপনা সহস্রধারা। ঘন সবুজ রাবার গাছের মধ্য দিয়ে জলপ্রপাতের স্রোত বেয়ে যায়।

চন্দ্রনাথ মন্দির: ইকোপার্কের আভ্যন্তরীণ রাস্তা ধরে গাড়িতে অথবা পায়ে হেঁটে অনায়াসে পৌঁছে যাওয়া যায় ইকোপার্কের গেইট হতে পাঁচ কিলোমিটার অভ্যন্তরে চন্দ্রনাথ শিব মন্দিরে। দুইশত বায়ান্নটি সিঁড়ি বেয়ে মন্দিরে উঠতে হবে। তবে পাহাড়ের পাদদেশ থেকে মোট ষোলশত সিঁড়ি বেয়ে শিব মন্দিরে উঠতে হয়। ফাল্গুনে যখন শিব সংক্রান্তি পূজা চলে তখন দেশ-বিদেশের বৈঞ্চব-বৈঞ্চবদের কীর্তনে মুখরিত হয়ে উঠে পুরো চন্দ্রনাথ অরণ্য।

উদ্ভিদ: বোটানিক্যাল গার্ডেন ও ইকোপার্কের চিরসবুজ বনাঞ্চলে ৯৬ টি প্ল্যান্ট ফ্যামিলির মোট ৪১২ প্রজাতি আছে। যার মধ্যে ১৫৬ প্রজাতির উদ্ভিদ, ১১০ প্রজাতির গুল্ম, ১১৯ প্রজাতির ভেষজ ও ২৭ প্রজাতির লতা রয়েছে। রয়েছে দুর্লভ কালো গোলাপসহ প্রায় ৩৫ প্রকার গোলাপ, জবা, নাইট কুইন, পদ্ম, স্থলপদ্ম, নাগবল্লী, রঙ্গন, রাধাচূঁড়া, কামিনী, কাঠ মালতী, অলকানন্দা, বাগানবিলাস, হাসনাহেনা, গন্ধরাজ, ফনিকা মিলে রয়েছে ১৫০ জাতের ফুল।

বন্যপ্রাণী: পাহাড়ের বাঁকে বাঁকে দেখতে পাওয়া যায় বিভিন্ন প্রজাতির পাখি আর বন্যপ্রাণীর। ইকোপার্কের বিভিন্ন বন্যপ্রাণীর মধ্যে মায়া হরিণ, বানর, হনুমান, খরগোশ, বন বিড়াল, মেছোবাঘ, বেজী, গুইসাপ, গোখরা, অজগর, বন মোরগ, মথুরা, টিয়া, পাহাড়ী ময়না, শালিক, কালো মাথা বেনে বউ, পেঁচা, প্রভৃতি অন্যতম।

অর্কিড হাউস: বোটানিক্যাল গার্ডেনে একটি সুন্দর অর্কিড হাউস স্থাপন করা হয়েছে। এখানে বিভিন্ন প্রজাতির দৃষ্টিনন্দন কয়েকশ অর্কিড আছে।

কবি নজরুল ভাস্কর্য: ১৯২৬ খ্রিস্টাব্দের জানুয়ারি মাসের বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম চট্টগ্রাম সফরে আসেন। ২৪ জানুয়ারি তিনি রচনা করেছিলেন তার বিখ্যাত কবিতা- বাতায়ন পাশে গুবাক তরুর সারি এবং সাম্পানের গান। চট্টগ্রাম সফরকালে কাজী নজরুল ইসলাম ভ্রমণ করেছিলেন সীতাকুণ্ড বনাঞ্চলে। সীতাকুণ্ডের পাহাড়, সমুদ্র ও ঝরণার সমন্বয়ে সৃজিত অপরূপ সৌন্দর্য অবলোকন করে মুগ্ধ নজরুল রচনা করেছিলেন “আকাশে হেলান দিয়ে পাহাড় ঘুমায় ঐ” এই অমর গান। বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের স্মৃতিকে ধরে রাখার জন্য বোটানিক্যাল গার্ডেন ও ইকোপার্কে স্থাপন করা হয়েছে নজরুল ভাস্কর্য।

গহীন বন: ২০০১ সালে ইকো-পার্কটি স্থাপিত হওয়ার পর থেকে বৃক্ষরোপণের মাধ্যমে এখানে গহীন বন সৃষ্টি হয়েছে। পশুপাখির কলকাকলিতে মুখরিত এ বনে ঘুরে বেড়াতে পর্যটকরা ‍খুবই পছন্দ করে।

গোলাপ বাগান : ৪ টি গোলাপ বাগানে ৮০০ (আটশত) গোলাপ গাছে লাল, নীল, বেগুনী, সবুজ, গোলাপী, সাদা, কালো, মেরুন ও হলুদ ও থোকা থোকা হাইব্রিড মনোমুগ্ধকর গোলাপের সমাহার রয়েছে।

শিশু কর্ণার: ইকোপার্কে আগত শিশুদের চিত্ত বিনোদনের জন্য রাখা হয়েছে একটি শিশু কর্ণার।


বোটানিক্যাল গার্ডেন ও ইকোপার্কের ইতিহাস

১৯৯৮ সালে চন্দ্রনাথ পাহাড়ের পাদদেশে বাংলাদেশের প্রথম ইকোপার্ক প্রতিষ্টিত হয়। পরে চন্দ্রনাথ মন্দির, সুপ্তধারা ঝর্ণা ও সহস্রধারা ঝর্ণাকে কেন্দ্র করে রামগড়-সীতাকুন্ডে সংরক্ষিত বনের সীতাকুন্ড ব্লকের সয়িষ্ণু বনাঞ্চলের ১৯৯৬ একর এলাকাজুড়ে পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ও উন্নয়নের জন্য এবং পাশাপাশি জনগণের চিত্ত বিনোদনের জন্য ২০০১ সালে বোটানিক্যাল গার্ডেন ও ইকোপার্ক স্থাপন করা হয়।

চট্টগ্রামের পাহাড়ি বনাঞ্চল এক সময় জীববৈচিত্র্যের হটস্পট হিসেবে বিবেচিত হত। কিন্তু কালের পরিক্রমায় জনসংখ্যা বৃদ্ধির বাড়তি চাপে বন্যপ্রাণী, উদ্ভিদরাজী ও প্রাকৃতিক প্রাচুর্য হ্রাস পেতে থাকে। এমতাবস্থায়, পাহাড়ি বনাঞ্চলের ক্ষয়িত পরিবেশ ও জীববৈচিত্র সংরক্ষণ ও উন্নয়নের পাশাপাশি ইকো-ট্যুরিজম উন্নয়নের লক্ষ্যে এ পার্কটি স্থাপন করা হয়। ৮০৮.০০ হেক্টর জমি নিয়ে অভয়ারণ্যটি গঠিত। ১৯৯৬ একরের পার্কটি দুটি ভাবে বিভক্ত। ৪০৫.০ হেক্টর অর্থাৎ ১০০০ একর নিয়ে বোটানিক্যাল গার্ডেন এবং বাকি ৯৯৬ একর জায়গাজুড়ে ইকোপার্ক এলাকা। ইতোমধ্যে অতিরিক্ত ০.৬২ হেক্টর ভূমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে।


বোটানিক্যাল গার্ডেন ও ইকোপার্কের টিকিট মূল্য

কখন যাবেন
বর্ষাকাল ব্যতীত অন্যান্য ঋতুতে পানির পরিমাণ অত্যান্ত কম থাকে। তাই অন্যান্য ঋতুতে ঝর্ণার পানি সব সময় গরিয়ে পড়লেও তাতে ঝর্ণার আসল রুপ ধরা যায়না। এজন্যই বর্ষাকাল উপযুক্ত সময়।
বিশেষ পরামর্শ
নোংরা আবর্জনা যেখানে সেখানে ফেলা থেকে বিরত থাকবেন। আবহাওয়া খারাপ দেখলে আপনাকে অতিরিক্ত সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। নতুবা অনেক সময়  বৃষ্টি হলে আটকা পরতে পারেন। সকাল সকাল পাহাড়ের উপর যাওয়ার চেষ্টা করবেন। ভালো মানের গ্রিপের জুতা পরে যাবেন। বর্ষাকালে ঝর্ণায় যাওয়ার সময় সতর্ক হয়ে পথ চলতে হবে। শুধু বর্ষা নয়। সকল ঋতুতেই রাস্তা বেশ কঠিন ও পিচ্ছিল থাকে। জোঁক থেকে বাঁচতে ঘাস এড়িয়ে চলবেন। তাই সঙ্গে লবন নিয়ে যাবেন। জোঁক লাগলে ছাড়ানোর কাজে আসবে। লবনের পাশাপাশি সঙ্গে টর্স লাইট, পাওয়ার ব্যাংক, ব্যান্ডেজ, ডেটল/স্যাভলন জাতীয় এন্টিসেপটিক, দড়ি ইত্যাদি রাখবেন। সাতার না জানলে লাইফ জ্যাকেট নিবেন। ম্যালেরিয়া প্রবণ এলাকা হওয়ায় যাত্রা শুরুর ১ সপ্তাহ আগে থেকে  যাত্রা শেষ হবার ৪ সপ্তাহ পর্যন্ত ডক্সিসাইক্লিন ট্যাবলেট (১০০ মি.গ্রা.) খেতে হবে। কোনো সমস্যা হলে অবহেলা না করে ডাক্তারকে ভ্রমণের বিষয়ে অবগত করবেন। 
বিশেষ সতর্কতা
যাদের আত্মবিশ্বাসের কমতি আছে, যাদের হার্ট দুর্বল, যারা অল্পতেই ইমোশনাল হয়ে পড়েন, যাদের পেছনে তাকানোর অভ্যাস আছে, যারা নিজের জীবন নিয়ে শঙ্কিত অনুভব করেন, যারা কম পরিশ্রমী, যাদের শ্বাসকষ্ট আছে, একটু হাঁটলেই হাঁপিয়ে পরেন এবং যাদের অতিরিক্ত বমি হয় তাদের জন্য পাহাড়ে ওঠা ঝুঁকিপূর্ণ।

দেশের বিভিন্ন বিভাগীয় শহর থেকে সীতাকুণ্ড ইকো পার্কের দূরত্ব
ঢাকা ২১৯ কি.মি. (কুমিল্লা → ফেনী হয়ে গেলে)
রাজশাহী ৪৬২ কি.মি. (ঢাকা হয়ে গেলে)
রংপুর ৫১৫ কি.মি.
সিলেট ৩৪৪ কি.মি. (বিজয়নগর → আখাউরা → কুটি হয়ে গেলে)
ময়মনসিংহ ৩৩০ কি.মি. (ঢাকা হয়ে গেলে)
খুলনা ৩১২ কি.মি. (বরিশাল → ফেনী হয়ে গেলে)
বরিশাল ২০৯ কি.মি. (ফেনী হয়ে গেলে)
চট্টগ্রাম ৩৫ কি.মি.

ঢাকা থেকে যাওয়ার উপায়

(দেশের যেকোনো প্রান্ত থেকে সীতাকুণ্ড ইকো পার্ক যাওয়া যায়। চট্টগ্রাম জেলার অন্তর্গত হওয়ায় চট্টগ্রামগামী যেকোনো পরিবহনে সীতাকুন্ড আসা যায়। সীতাকুণ্ড ইকো পার্ক যেতে হলে সর্বপ্রথম আপনাকে সীতাকুন্ড অথবা চট্টগ্রাম যেতে হবে।) 

বাস ঢাকার বাস স্টান্ডসমূহ:-
  • সায়েদাবাদ
  • ফকিরাপুল
  • মহাখালী
  • কল্যাণপুর
বাস সমূহ:-
  • হানিফ
  • এস আলম
  • শ্যামলী
  • ঈগল
  • সৌদিয়া
  • ইউনিক
  • এনা
ট্রেন ট্রেন সমূহ:
  • সোনার বাংলা
  • সুবর্ণ এক্সপ্রেস
  • তূর্ণা-নিশীথা
  • মোহনগর প্রভাতী/গোধুলি
  • চট্টগ্রাম মেইল

(ঢাকা থেকে কম খরচে ট্রেনে চড়ে যেতে চাইলে কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে চট্টগ্রামগামী মেইল ট্রেনে উঠতে হবে। কেননা ঢাকা মেইল ছাড়া আর অন্য কোনো ট্রেন সীতাকুন্ড স্টেশনে থামেনা। সরাসরি চট্টগ্রামে চলে যায়। তাই চট্টগ্রাম গামী ট্রেনে উঠলে ফেনী স্টেশনে নেমা রিকশা নিয়ে মহিপাল যেতে হবে। মহিপাল থেকে বাসে সীতাকুন্ড বাজারে যাওয়া যাবে। ঢাকা মেইল/চট্টলা এক্সপ্রেস ট্রেনটি ঢাকা থেকে রাত ১১ টায় ছাড়ে এবং সকাল সাড়ে ৬ টা থেকে ৭ টার মধ্যে সীতাকুন্ডে পৌছায় (২০২৪ সালের রেকর্ড অনুযায়ী)। ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটের ট্রেনগুলোর মধ্যে শুধু এই ট্রেন সীতাকুণ্ড স্টেশনে থামে।)

বিমান বিমানসমূহ:
  • ইউএস বাংলা
  • বাংলাদেশ বিমান

(চট্টগ্রাম শহরের যেকোনো জায়গা থেকে বাসে, অটোরিকশা কিংবা রিকশা রিজার্ভ এর মাধ্যমে সীতাকুন্ডে যেতে পারবেন।)

(সীতাকুণ্ড বাজার থেকে চন্দ্রনাথ ধামের প্রবেশদ্বারে যাওয়ার সিএনজি ভাড়া ১০০ টাকা। রিক্সায় ৫০ টাকা ভাড়া [২০২২ সালের রেকর্ড অনুযায়ী])

রাজশাহী থেকে যাওয়ার উপায়

বাস বাস স্টান্ডসমূহ:-
  • বানেশ্বর
  • বিনোদপুর
  • কাজলা
  • কাতাখালি
  • পুটিয়া
  • রাজাবাড়ি
  • শিরুল (ঢাকা ও চট্টগ্রাম)

বাস সমূহ:-

  • এভারগ্রীন পরিবহন

(যাত্রা পূর্বে অবশ্যই কোথায় যাচ্ছেন, পরিবহনগুলো আপনার গন্তব্য অবধি যাবে কিনা তা ভালোভাবে যাচাই করে নিবেন। কেননা সময় পরিবর্তনের সাথে তথ্যগুলোও পরিবর্তনশীল)

ট্রেন

[রাজশাহী থেকে সীতাকুন্ডে সরাসরি কোনো ট্রেন নেই। আপনাকে আগে ঢাকা গিয়ে তারপর ট্রেনে যেতে হবে।]

ঢাকা যাওয়ার জন্য জনপ্রিয় ট্রেনগুলির মধ্যে রয়েছে:

  • মধুমতি এক্সপ্রেস
  • সিল্কসিটি এক্সপ্রেস
  • পদ্মা এক্সপ্রেস
  • ধুমকেতু এক্সপ্রেস

[যেহেতু ঢাকা মেইল ট্রেন ধরতে হবে। তাই প্রথমে নাটোর থেকে দ্রুতযান এক্সপ্রেস দিয়ে ঢাকা যাওয়া ভালো]

বিমান

[রাজশাহী থেকে সীতাকুন্ডে সরাসরি কোনো ফ্লাইট নেই। আপনাকে আগে ঢাকা গিয়ে তারপর বাসে অথবা ট্রেনে যেতে হবে।]

ঢাকা যাওয়ার বিমানসমূহ:

  • ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্স
  • বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স
  • নভোএয়ার
  • ওয়েস্টার্ন এয়ারলাইন্স

রংপুর থেকে যাওয়ার উপায়

বাস বাস স্টান্ডসমূহ:-
  • ঢাকা বাসস্টান্ড

বাস সমূহ:-

  • হানিফ পরিবহন

(যাত্রা পূর্বে অবশ্যই কোথায় যাচ্ছেন, পরিবহনগুলো আপনার গন্তব্য অবধি যাবে কিনা তা ভালোভাবে যাচাই করে নিবেন। কেননা সময় পরিবর্তনের সাথে তথ্যগুলোও পরিবর্তনশীল)

ট্রেন

[রংপুর থেকে সীতাকুন্ডে সরাসরি কোনো ট্রেন নেই। আপনাকে আগে ঢাকা গিয়ে তারপর ট্রেনে যেতে হবে।]

ঢাকা যাওয়ার জন্য জনপ্রিয় ট্রেনগুলির মধ্যে রয়েছে:

  • কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেস
  • রংপুর এক্সপ্রেস

সিলেট থেকে যাওয়ার উপায়

বাস বাস স্টান্ডসমূহ:-
  • কদমতলী
  • হুমায়ুন রশিদ চত্ত্বর
  • সোভানি ঘাট
  • সিলেট বাসস্টান্ড
  • হুমায়ুন রশিদ স্কয়ার বাসস্টান্ড (ঢাকা)
  • জাফলং বাসস্টান্ড (ঢাকা)

বাস সমূহ:-

  • এনা পরিবহন
  • সৌদিয়া পরিবহন

    ঢাকা যাওয়ার বাস সমূহ:-

    • এনা পরিবহন
    • সৌদিয়া পরিবহন
    • হানিফ পরিবহন

(যাত্রা পূর্বে অবশ্যই কোথায় যাচ্ছেন, পরিবহনগুলো আপনার গন্তব্য অবধি যাবে কিনা তা ভালোভাবে যাচাই করে নিবেন। কেননা সময় পরিবর্তনের সাথে তথ্যগুলোও পরিবর্তনশীল)

ট্রেন

[সিলেট থেকে সীতাকুন্ডে সরাসরি কোনো ট্রেন নেই। আপনাকে আগে ঢাকা গিয়ে তারপর ট্রেনে যেতে হবে।]

ঢাকা যাওয়ার জন্য জনপ্রিয় ট্রেনগুলির মধ্যে রয়েছে:

  • জয়ন্তিকা এক্সপ্রেস
  • পারাবত এক্সপ্রেস
  • উপবন এক্সপ্রেস

ময়মনসিংহ থেকে যাওয়ার উপায়

বাস বাস সমূহ:-
  • শ্যামলী পরিবহন
  • সোনার বাংলা পরিবহন
  • আকাশ পরিবহন
  • হৃদয় পরিবহন
  • ঈগল পরিবহন

(যাত্রা পূর্বে অবশ্যই কোথায় যাচ্ছেন, পরিবহনগুলো আপনার গন্তব্য অবধি যাবে কিনা তা ভালোভাবে যাচাই করে নিবেন। কেননা সময় পরিবর্তনের সাথে তথ্যগুলোও পরিবর্তনশীল)

ট্রেন

[ময়মনসিংহ থেকে সীতাকুন্ডে সরাসরি কোনো ট্রেন নেই। আপনাকে আগে ঢাকা গিয়ে তারপর ট্রেনে যেতে হবে।]

ঢাকা যাওয়ার জন্য জনপ্রিয় ট্রেনগুলির মধ্যে রয়েছে:

  • ময়মনসিংহ মেইল
  • মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেস
  • যমুনা এক্সপ্রেস
  • ব্রহ্মপুত্র এক্সপ্রেস
  • হাওর এক্সপ্রেস
  • তিস্তা এক্সপ্রেস
  • জামালপুর এক্সপ্রেস
  • আগ্নিবীণা এক্সপ্রেস

খুলনা থেকে যাওয়ার উপায়

বাস বাস স্টান্ডসমূহ:-
  • সোনাডাঙ্গা
  • রয়াল চত্ত্বর
  • রয়াল মোড়
  • ফুলতলা (ঢাকা)
  • ফুলবাড়ি গেট (ঢাকা)
  • দৌলতপুর (ঢাকা)
  • নতুন রাস্তা (ঢাকা)
  • আফিল গেট (ঢাকা)
  • বয়রা বাজার (ঢাকা)

বাস সমূহ:-

  • সৌদিয়া কোচ
  • সেইন্টমার্টিন হুন্ডাই (রবি এক্সপ্রেস)

ঢাকা যাওয়ার বাস সমূহ:-

    • এনা পরিবহন
    • টাইম ট্রেভেলস
    • সেইন্টমার্টিন হুন্ডাই (রবি এক্সপ্রেস)
    • সোহাগ পরিবহন

(যাত্রা পূর্বে অবশ্যই কোথায় যাচ্ছেন, পরিবহনগুলো আপনার গন্তব্য অবধি যাবে কিনা তা ভালোভাবে যাচাই করে নিবেন। কেননা সময় পরিবর্তনের সাথে তথ্যগুলোও পরিবর্তনশীল)

ট্রেন

[খুলনা থেকে সীতাকুন্ডে সরাসরি কোনো ট্রেন নেই। আপনাকে আগে ঢাকা গিয়ে তারপর ট্রেনে যেতে হবে।। অথবা বরিশাল হয়ে যেতে হবে।]

ঢাকা যাওয়ার জন্য জনপ্রিয় ট্রেনগুলির মধ্যে রয়েছে:

  • সুবর্ণা এক্সপ্রেস
  • চিত্রাংদা এক্সপ্রেস/চিত্রা এক্সপ্রেস
বিমান

[খুলনা থেকে সীতাকুন্ডে সরাসরি কোনো ফ্লাইট নেই। আপনাকে আগে ঢাকা গিয়ে তারপর বাসে অথবা ট্রেনে যেতে হবে। অথবা বরিশাল হয়ে যেতে হবে।]

ঢাকা যাওয়ার বিমানসমূহ:

  • ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্স
  • বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স
  • নভোএয়ার
  • ওয়েস্টার্ন এয়ারলাইন্স

বরিশাল থেকে যাওয়ার উপায়

বাস বাস স্টান্ডসমূহ:-
  • নাটুল্লাবাদ

বাসসমূহ:-

  • হানিফ পরিবহন
  • সৌদিয়া কোচ

চট্টগ্রাম থেকে যাওয়ার উপায়

বাস বাস স্টান্ডসমূহ:-
  • মাদারবাড়ী
  • কদমতলী

এছাড়াও চট্টগ্রাম থেকে অলংকার বা একে খান বাসস্ট্যান্ড থেকে সীতাকুন্ডের বাস পাওয়া যায়।


থাকা ও খাওয়ার ব্যবস্থা

(সীতাকুন্ডের স্থানগুলো একদিনেই ঘুড়ে দেখা সম্ভব। সেক্ষেত্রে ভোর থেকেই যাত্রা শুরু করতে হবে। নতুবা থাকতে হবে। থাকা ও খাওয়ার জন্য সীতাকুন্ডে সবরকমের ব্যবস্থা রয়েছে।)

আবাসিক হোটেলসমূহ
  • হোটেল সৌদিয়া
  • হোটেল সাইমুন
  • ডাক বাংলা
  • হোটেল এশিয়ান
  • হোটেল রেডিসন ব্লু ইত্যাদি।

 (উক্ত আবাসিক হোটেলসমূহের নাম দিয়ে ইন্টারনেটে সার্চ দিলে বুকিং সম্পর্কিত সকল তথ্য পেয়ে যাবেন।)

রেস্টুরেন্টসমূহ

(শহরের যেকোনো জায়গায় কিংবা আবাসিক হোটেলের আশেপাশে অনেক রেস্টুরেন্ট পাবেন।)


সীতাকুন্ড ভ্রমণের সুবিধা হল

  • উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা।
  • পরিবার/দম্পতি বা বন্ধুদের সাথে উপযুক্ত সময় কাটানোর সুবিধা।
  • সুন্দর এবং মনোরম পরিবেশ।

পরামর্শ: প্রথমত, গাড়ি বা নৌকা ভ্রমণ, হোটেল বুকিং, খাবার কিংবা কোন কিছু কেনার পূর্বে দর কষাকষিতে সর্বদা সতর্ক থাকবেন। এছাড়াও-

  • প্রয়োজনে ছাতা বা রেইনকোট নিবেন।
  • স্থানীয় গাইডের সাহায্যে পুরো অঞ্চল সুন্দরভাবে ঘুরতে পারবেন।
  • পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর কিছু এড়িয়ে চলবেন।

 

দৃষ্টি আকর্ষণযে কোন পর্যটন স্থান আমাদের দেশের সম্পদ। এইসব স্থানের প্রাকৃতিক কিংবা সৌন্দর্য্যের জন্যে ক্ষতিকর এমন কিছু করা থেকে বিরত থাকবেন, অন্যদেরকেও উৎসাহিত করবেন। দেশ আমাদের, দেশের সকল কিছুর প্রতি যত্নবান হবার দায়িত্বও আমাদের।

সতর্কতা: হোটেল, রিসোর্ট, যানবাহন ভাড়া ও অন্যান্য খরচ সময়ের সাথে পরিবর্তন হয় তাই উল্লিখিত তথ্য বর্তমানের সাথে মিল নাও থাকতে পারে। তাই অনুগ্রহ করে আপনি কোথাও ভ্রমণে যাওয়ার আগে বর্তমান ভাড়া ও খরচের তথ্য জেনে পরিকল্পনা করবেন।

বি.দ্রঃ সকল প্রকার দালাল/প্রতারক থেকে সাবধান। পথে অনেক সাবধানে চলবেন যেন কোনো প্রকার বিপদে না পরেন। যেকোনো সমস্যায় স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগীতা নিবেন অথবা বাংলাদেশের জাতীয় জরুরী সেবা – ৯৯৯ এ কল করবেন।


যেকোন তথ্য অথবা ভ্রমণ সহায়তার জন্য যোগাযোগ করুন অথবা কমেন্ট করুন-
ইমেইলadmin@biratbazar.com

 

নতুন নতুন আপডেট পেতে চোখ রাখুন আমাদের ইউটিউব এবং সোশ্যাল চ্যানেলে-
ইউটিউব – https://www.youtube.com/@BiratBazar
ফেইসবুক – https://www.facebook.com/BiratBazarOfficial
→ টুইটার – https://twitter.com/BiratBazar
→ ইন্সটাগ্রাম – https://www.instagram.com/biratbazar/
থ্রেডস – https://www.threads.net/@biratbazar
লিংকড ইন – https://www.linkedin.com/company/biratbazar
 

 

অন্যান্য দর্শনীয় স্থান
Leave a Comment

Recent Posts

হযরত শাহজালাল রহ.

শাহ জালাল (রাহ.) বাংলার একজন প্রখ্যাত সুফি দরবেশ। শুধু বাংলার নয়, সম্পূর্ণ পাক-ভারতীয় উপমহাদেশে তিনি বিখ্যাত। পুরো নাম শাহ জালাল… Read More

1 week ago

মেঘলা পর্যটন কমপ্লেক্স

মেঘলা পর্যটন কমপ্লেক্স বান্দরবান জেলার প্রবেশ পথে (বান্দরবান-কেরাণীহাট) সড়কের পাশে পার্বত্য জেলা পরিষদ সংলগ্ন এলাকায় অবস্থিত। এটি বান্দরবান শহর থেকে… Read More

1 month ago

Meghla Tourism Complex

Meghla Tourism Complex is located at the entrance of Bandarban district, along the Bandarban-Keranihat road, adjacent to the Hill District… Read More

1 month ago

বাকলাই জলপ্রপাত

বাকলাই জলপ্রপাত বাংলাদেশের বান্দরবন জেলার থানচি উপজেলার নাইটিং মৌজার বাকলাই গ্রামে অবস্থিত। স্থানীয়দের নিকট “বাক্তলাই ঝর্ণা” নামেও পরিচিত। মুলত কেওক্রাডং… Read More

2 months ago

Baklai Falls

Baklai Waterfall is located in Baklai village of Nighting Moujar in Thanchi Upazila of Bandarban District, Bangladesh. Also known as… Read More

2 months ago

দুমলং পাহাড়

দুমলং পাহাড় বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় রাঙ্গামাটি জেলার বিলাইছড়ি উপজেলায় অবস্থিত। স্থানীয়দের নিকট এটি “ম্শা পাঞ্জি হাফং” কিংবা “রেংত্লাং” হিসেবে পরিচিত। এর… Read More

2 months ago