যা চট্টগ্রাম জেলার সীতাকুন্ড উপজেলার নদী মোহনায় অবস্থিত এবং স্থানীয়দের নিকট এটি মুরাদপুর সমুদ্র সৈকত নামে পরিচিত। সীতাকুন্ড থেকে প্রায় ৫ কি.মি. দূরে এই সমুদ্র সৈকতটি অবস্থিত। বেসরকারি বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রনালয় উক্ত সৈকতটিকে সংরক্ষিত এলাকা হিসেবে ঘোষণা করেছে। এই ঘোষণার আওতায় রয়েছে প্রায় ২৫৯ দশমিক ১০ একর সংরক্ষিত বনাঞ্চল। গুলিয়াখালী সমুদ্র সৈকতের একটি আকর্ষণীয় বিষয় এর এক দিকে রয়েছে দিগন্ত জোড়া জলরাশি ও অন্যদিকে রয়েছে কেওড়া বন। কেওড়া বনের মাঝ দিয়ে বয়ে যাওয়া খালের চারিদিকে কেওড়া গাছের শ্বাসমূল লক্ষ করা যায়, এই বন সমুদ্রের অনেকটা ভেতর পর্যন্ত চলে গেছে। এখানে পাওয়া যাবে সোয়াম্প ফরেস্ট ও ম্যানগ্রোভ বনের মত পরিবেশ। এই বীচে সারিবদ্ধ ভাবে রয়েছে অসংখ্য ছোট ছোট গাছপালা সাথে সবুজ কার্পেটের মত চওড়া ঘাস। যার মাঝখান দিয়ে এঁকে-বেকে চলে গেছে অনেক সরু নালা। যখন জোয়ারের সময় আসে তখন এই নালাগুলো পানিতে পরিপূর্ণ হয়ে ওঠে। এছাড়াও সৈকতের ৫ কিলোমিটারের মধ্যে চন্দ্রনাথ পাহাড় ও মন্দির, বোটানিক্যাল গার্ডেন ও ইকোপার্ক, সহস্রধারা ও সুপ্তধারা নামের দুটি ঝর্না রয়েছে। জেলেদের বোটে সমুদ্র ঘুরে দেখা যায়। ২০২২ সালের রেকর্ড অনুযায়ী মাত্র দুই হাজার টাকার বিনিময়ে ঘুরতে পারবেন জেলেদের বোটে।
পূর্বে এই সমুদ্র সৈকতের তেমন কোন পরিচিতি ছিল না। ২০১৪ সালে চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি (চুয়েট) বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু ছাত্র এই সৈকতটি ঘুরে এর কিছু ছবি ও ভিডিও ধারণ করে সামাজিক মাধ্যমগুলোতে শেয়ার করে। আর তারপর থেকেই এই সৈকতের পরিচিতি বাড়তে থাকে। আর পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে লোকজনের সমাগম বাড়তে থাকে।
কখন যাবেন |
---|
অন্যান্য মৌসুমের তুলনায় বর্ষাকালে এই সমুদ্র উত্তাল থাকে। তাই প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগের জন্য বর্ষার মৌসুম উপযুক্ত সময়। তবে সারাবছরই এখানে যাওয়া যায়। |
বিশেষ পরামর্শ |
অনুমতি ছাড়া স্থানীয়দের ছবি তোলা যাবে না। স্থানীয় এবং সেনাবাহিনীর সাথে তর্কে জড়ানো থেকে বিরত থাকবেন। যেখানে সেখানে খোসা বা প্লাস্টিক জাতীয় জিনিস এবং বোতল ফেলা ঠিক নয়। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি, হালকা খাবার এবং প্রাথমিক চিকিৎসা সামগ্রী,পাওয়ার ব্যাংক সঙ্গে রাখবেন।
|
বিশেষ সতর্কতা |
সৈকতটি ভ্রমণের অন্যান্য সুযোগ সুবিধা থাকলেও ট্যুরিস্ট পুলিশ না থাকায় সন্ধার পর থেকে রাত অবধি জায়গাটি তেমন নিরাপদ নয়। তাই সন্ধ্যার পূর্বেই গুলিয়াখালী সমুদ্র সৈকত ত্যাগ করা ভাল। তা না হলে ছিনতাইকারীর কবলে পড়তে পারেন। সাতার না জানলে কখনো বেশিদূর যাওয়া যাবেনা। জোয়ার ভাটার সময় জেনে নিবেন আগেই। জোয়ারের সময় হলে বিচের কাছে না থাকাই ভালো। পানির ঢেউ বাড়লে বিচ থেকে চলে আসবেন। জোয়ারের সময় পানি উঠে নালাগুলো পূর্ণ হয়ে যায়। তখন পারাপারে সমস্যা হতে পারে। এটা পর্যটন বান্ধব বীচ না হওয়ায় সমুদ্রে নামার ক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে হবে। যদিও বর্তমানে সরকার সমুদ্র সৈকতটিকে পর্যটন সংরক্ষিত বনাঞ্চলের ২৫৯ দশমিক ১০ একর জায়গা এই ঘোষণার আওতায় এনেছে। কিন্তু সরকার কর্তৃক পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে এখনো স্বীকৃতি পায়নি। |
দেশের বিভিন্ন বিভাগীয় শহর থেকে গুলিয়াখালী সমুদ্র সৈকতের দূরত্ব |
|
ঢাকা | ২২৩ কি.মি. |
রাজশাহী |
৪৬৭ কি.মি.
৬৮৮ কি.মি. (কুষ্টিয়া হয়ে গেলে) |
রংপুর | ৫১৬ কি.মি. |
সিলেট | ৩২৬ কি.মি. |
ময়মনসিংহ |
৩২৪ কি.মি. (কিশোরগঞ্জ হয়ে গেলে)
৩৩৩ কি.মি. (ঢাকা হয়ে গেলে) |
খুলনা | ২৮৭ কি.মি. (বরিশাল হয়ে গেলে) |
বরিশাল | ২১৩ কি.মি. |
চট্টগ্রাম | ৪০.৯ কি.মি. |
ঢাকা থেকে যাওয়ার উপায় |
|
(গুলিয়াখালী সমুদ্র সৈকত যেতে হলে সর্বপ্রথম আপনাকে চট্টগ্রাম যেতে হবে।) |
|
বাস |
ঢাকার বাস স্টান্ডসমূহ:
|
বাস সমূহ:
|
|
ট্রেন |
ট্রেন সমূহ:
|
বিমান |
বিমানসমূহ:
|
ঢাকা থেকে গুলিয়াখালী সমুদ্র সৈকত সরাসরি যাওয়ার কোন পরিবহন না থাকায় প্রথমে চট্টগ্রাম থেকে সীতাকুন্ড এবং সীতাকুন্ড থেকে গুলিয়াখালী সমুদ্র সৈকত যেতে হবে। |
|
চট্টগ্রাম থেকে সীতাকুন্ড অলংকার মোড় → এ কে খান মোড় → কদমতলী (সীতাকুন্ডের বাসস্টান্ড ব্রিজের নিচেই সরাসরি গুলিয়াখালি যাওয়ার সিএনজি/অটো পাওয়া যায়। এছাড়াও চট্টগ্রাম শহরের যেকোনো জায়গা থেকে বাসে, অটো-রিকশা কিংবা রিকশা রিজার্ভ এর মাধ্যমে সীতাকুন্ড যেতে পারবেন।) সীতাকুন্ড থেকে গুলিয়াখালী সমুদ্র সৈকত (আবার সীতাকুন্ড থেকে বাসে, অটো-রিকশা কিংবা রিকশা রিজার্ভ এর মাধ্যমে গুলিয়াখালী সমুদ্র সৈকত যেতে পারবেন।) |
থাকা ও খাওয়ার ব্যবস্থা |
|
(গুলিয়াখালিতে থাকা ও খাওয়ার কোনো ব্যবস্থা নেই। শুধুমাত্র একটি ছোট দোকান আছে। তাই প্রয়োজনে সীতাকুন্ড বাজার থেকে খাবার সংগ্রহ করেই রওনা দিবেন। অথবা থাকা ও খাওয়ার জন্য সীতাকুন্ডে সবরকমের ব্যবস্থা রয়েছে।) |
|
আবাসিক হোটেলসমূহ |
(উক্ত আবাসিক হোটেলসমূহের নাম দিয়ে ইন্টারনেটে সার্চ দিলে বুকিং সম্পর্কিত সকল তথ্য পেয়ে যাবেন।) |
রেস্টুরেন্টসমূহ |
(শহরের যেকোনো জায়গায় কিংবা আবাসিক হোটেলের আশেপাশে অনেক রেস্টুরেন্ট পাবেন।) |
গুলিয়াখালী সমুদ্র সৈকত ভ্রমণের সুবিধা হল-
পরামর্শ: প্রথমত, গাড়ি বা নৌকা ভ্রমণ, হোটেল বুকিং, খাবার কিংবা কোন কিছু কেনার পূর্বে দর কষাকষিতে সর্বদা সতর্ক থাকবেন। এছাড়াও-
দৃষ্টি আকর্ষণ: যে কোন পর্যটন স্থান আমাদের সম্পদ, আমাদের দেশের সম্পদ। এইসব স্থানের প্রাকৃতিক কিংবা সৌন্দর্য্যের জন্যে ক্ষতিকর এমন কিছু করা থেকে বিরত থাকুন, অন্যদেরকেও উৎসাহিত করুন। দেশ আমাদের, দেশের সকল কিছুর প্রতি যত্নবান হবার দায়িত্বও আমাদের।
সতর্কতা: হোটেল, রিসোর্ট, যানবাহন ভাড়া ও অন্যান্য খরচ সময়ের সাথে পরিবর্তন হয় তাই উল্লিখিত তথ্য বর্তমানের সাথে মিল নাও থাকতে পারে। তাই অনুগ্রহ করে আপনি কোথাও ভ্রমণে যাওয়ার আগে বর্তমান ভাড়া ও খরচের তথ্য জেনে পরিকল্পনা করবেন।
বি.দ্রঃ যেকোনো সমস্যায়, বাংলাদেশের জাতীয় জরুরী সেবা – ৯৯৯ এ কল করুন।
যেকোন তথ্য অথবা ভ্রমণ সহায়তার জন্য যোগাযোগ করুন অথবা কমেন্ট করুন-
→ ইমেইল – admin@biratbazar.com
সীতাকুন্ডের অন্যান্য দর্শনীয় স্থান
|
১। চন্দ্রনাথ পাহাড় |
উপমহাদেশের সর্বপ্রথম ও সর্বপ্রাচীন প্রতিষ্ঠিত ও সর্ববৃহৎ চা বাগান মালনীছড়া বাংলাদেশের সিলেট সদর উপজেলার ৩নং খাদিম নগর ইউনিয়নের এয়ারপোর্ট রোডে… Read More
The Malnicherra Tea Garden, the oldest and largest established tea plantation in the Indian subcontinent, is located on the outskirts… Read More
শাহ জালাল (রাহ.) বাংলার একজন প্রখ্যাত সুফি দরবেশ। শুধু বাংলার নয়, সম্পূর্ণ পাক-ভারতীয় উপমহাদেশে তিনি বিখ্যাত। পুরো নাম শাহ জালাল… Read More
মেঘলা পর্যটন কমপ্লেক্স বান্দরবান জেলার প্রবেশ পথে (বান্দরবান-কেরাণীহাট) সড়কের পাশে পার্বত্য জেলা পরিষদ সংলগ্ন এলাকায় অবস্থিত। এটি বান্দরবান শহর থেকে… Read More
Meghla Tourism Complex is located at the entrance of Bandarban district, along the Bandarban-Keranihat road, adjacent to the Hill District… Read More
বাকলাই জলপ্রপাত বাংলাদেশের বান্দরবন জেলার থানচি উপজেলার নাইটিং মৌজার বাকলাই গ্রামে অবস্থিত। স্থানীয়দের নিকট “বাক্তলাই ঝর্ণা” নামেও পরিচিত। মুলত কেওক্রাডং… Read More
Leave a Comment